"কিরে সুজানা তাহলে তুই এগুলো করিস?
পিছন থেকে চেনা পুরুষালি কন্ঠ শুনে ভ্রু কুঁচকে পিছনে ফিরে তাকালাম।
" কি করেছি সুহান ভাই?
" এইযে বনে বাদাড়ে প্রেম করে বেড়াস।
" বাজে বকবেন না, কখন দেখলেন প্রেম করে বেড়াই?
"ওহ রিয়েলী? আমি বাজে বকি। এক্ষুণি আমি মামীকে গিয়ে বলবো। ছেলেদের হাত ধরা কি আর এমনি এমনি।
" আরে ও আমার ফ্রেন্ড। হ্যান্ডশেক করে গেছে। আমি কি নিজে থেকে ধরতে গেছি নাকি।
" যাইহোক মামীকে বলতেই হয়। তার মেয়ে কি করে। কজ আমারো তো একটা দায়িত্ব আছে।
" প্লিজ সুহান ভাই। আপনার পায়ে পড়ি। আম্মুকে এইসব কথা বলবেন না। আম্মু আপনার কথায় বিশ্বাস করে বসবে।
উনি আমার দিকে ঝুঁকে এসে বললেন,
" আমিও তো চাই বিশ্বাস করুক। মিসেস সুহান।
" মানে, মিসেস সুহান?
" ওহ সরি মিসেস সুজানা। এই তোর নাম নিয়ে না একটা ঝামেলা। কে বলেছে য আমার নামের সাথে মিল রেখে নাম রাখতে।
"আপনার নামের সাথে কি জন্য মিলাবে? আপনার নাম সুহান আমার নাম সুজানা। শুধু সু এর ই মিল।
" তোর নাম সুজানা না রেখে কুজানা রাখা ভালো ছিলে কিছুই বুঝিস না জানিস না। গর্দভ তুই।
" আপনার আমার সাথে না লাগতে আসলে হয় না, তাই না?
" তোর মতো পেত্নীর সাথে সুহান চৌধুরী লাগতে আসবে? ভাবলি কি করে। সুহান চৌধুরীর যে হাওয়া পাস এটাই অনেক। লাগালাগি তো পরে।
" কি উল্টাপাল্টা বকছেন, আপনার এতো ভাব আসে কোথেকে?
উনি রক্তবর্ণ ধারণ করে আমার দিকে তাকি দাঁতখিচে বললেন,
" তোর দেখি সাহস বেড়ে যাচ্ছে সুজান, আমার সাথে তর্ক করিস। মামীকে বলতেই হয়......
এই বলেই হনহন করে চলে গেলেন। আমিও গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে বাড়িতে চলে আসলাম। ফুফিরা, আম্মু চাচীরা সবাই মিলে বসে গল্প করছে।বড় চাচার মেয়ে রিপা আপুর বিয়ে দুইদিন পর। তাই সবাই বিয়ে উপলক্ষে সবাই একসাথ হয়েছেন। নইলে সহজে একসাথ হন না।সুহান ভাই তো আসতে চাননি নাকি। ফুফি জোর করেই আনিয়েছেন।
হঠাৎ পিছন থেকে কেউ হাত দিয়ে আমার চোখ ধরে রাখে।
" নিশান ভাই তুমি ছাড়া তো কেউ হওয়ার নয়।
" ওলে আমার বোনটা ধরার সাথে সাথেই চিলে পেলেছে।
" বুঝতে হবে সুজানা মাল্টি ট্যালেন্টেড।
নিশান হচ্ছে আমার বড় ফুফির ছেলে। সবাই আগে চলে আসলেও ও ওর সবকিছু গুছিয়ে আজই আসে। সুহান ভাই ছাড়া আমি আমার বড় সব কাজিনদেরই তুমি করে বলি। ওনাকে কেন জানিনা ভয় হয়। আর সুযোগ পেলেই অপমান তো করেনই।
আম্মুরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শপিং করার জন্য বিকেলে বের হওয়ার জন্য। কারণ আগামীকালই তো হলুদ অনুষ্ঠান। আমি, ঝিনুক, মৌমিতা আপুকে যাওয়ার জন্য বলছে।
মৌমিতা আপু বলে উঠলেন, কিন্তু আমাদের সাথে তো একটা ছেলে যাওয়া দরকার তাইনা। আমরা সবকিছু করবো কীভাবে। আব্বু বা চাচাও তো সময় পাবেন না।
আম্মুঃ নিশান তো যেতে পারতো, কিন্তু ও তো মাত্রই আসলো জার্নি করে।
"ভাবি সুহান আছেতো, ওকে বলবো যেতে। ওতো এমনিতেই সারাদিন শুয়ে বসে আছে, বের হলে ভালোও লাগবে ওর কাছে
"তাহলে তো ভালোই ফুফি, তোমার ছেলেকে বলো।(মৌমিতা)
মৌমিতা হচ্ছে রিপা আপুর বোন আর ঝিনুক ছোটো চাচীর মেয়ে। মেঝো ফুফির একমাত্র ছেলে সুহান। বড় ফুফির ছেলে নিশান আর মেয়ে ফারিন। ফারিন আপুর বিয়ের পর থেকে উনি অস্ট্রিয়া থাকেন। ২,৩ বছরে একবার আসেন। রিপা আপুর বিয়েতে উনি আসতে পারবেন না। মেঝো ফুফি গিয়ে সুহান ভাইকে বলললেন শপিং এ আমাদের সাথে যাওয়ার জন্য। প্রথমে রাজি না হলেও পরে ফুফির জোরাজুরিতে রাজি হয়ে যান। বিকালের দিকে আমরা সবাই মিলে শপিং করার জন্য বের হলাম। সুহান ভাই আমাদের পিছে পিছে ছিলেন। আমরা পছন্দ করে হুলুদের গহনা, শাড়ি প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে নিলাম। সুহান ভাই একটিবার ও কথা বললেন না। মৌমিতা আপু জিজ্ঞেস করলেন সুহান ভাইর কিছু লাগবে কিনা। সুহান ভাই বলে, আমাকে কি তোমার বাচ্চা মনে হয় মৌমিতাপু , আমার লাগলে আমি নিয়ে নিবো জিজ্ঞেস করতে হবে না। আমার কাছে একটা নেকলেস সুন্দর লাগাতে হাতে নিয়ে নেড়ে দেখলাম।মৌমিতা আপু জিজ্ঞেস করলেন পছন্দ হইছে কিনা। আমি বললাম, নাহ আপু এমনিই নেড়ে দেখলাম। বরাবরই আমার কিছু পছন্দ বা ভালো লাগলে কাউকে বলার অভ্যাস নেই বা কাউকে কিছু বলে নেওয়ার অভ্যাস নেই একমাত্র বাবা ছাড়া। তাই আপু দুইবার জিজ্ঞেস করাতেও না করলাম। আমরা গায়ে হুলদের গয়না কিনলাম যদিও বরপক্ষ পাঠাবে কিন্তু তারাতো সবার জন্য হয়তো পাঠাতে পারবে না তাই। সবাই বাড়িতে যেতে যেতে রাতের ১২ টা বেজে গেলো। সুহান ভাই আমাদের নামিয়ে বললেন, তোমরা যাও আমি আসছি। আমি বাড়িতে গিয়ে সোজা উপরে নিজের রুমে গেলাম। গিয়েই ওয়াশরুমে ঢুকলাম গোসল করতে। ওয়াসরুম থেকে টাওয়াল পেঁছিয়ে বের হয়ে চুল মুছতে গিয়ে দেখি টেবিলে একটা বক্স আর একটা চিরকুট। চিরকুট টা খুলে দেখি লেখা আছে, ওয়াশরুমের দরজা না খুলে রাখলেও পারতে, এভাবে কেনো আমার চোখকে দোষারোপ করো। ভাগ্যিস তাকিয়ে থাকিনি।
চিরকুট টা পড়েই আমার চোখ কপালে সাথে সাথে এক রাশ লজ্জা গ্রাস করলো। কে এই চিরকুট ওয়ালা আমার কি ইজ্জত আবরু সব দেখে নিলো। শরীর শিউরে উঠলো। বক্সটা খুলে দেখি ওখানে একটা কালো শাড়ি আর আমার ওই পছন্দ করা নেকলেস টা, ইয়ারিং আর দুই ডজন কালো চুড়ি। আমি বেশ অবাক হলাম নেকলেস টা দেখে। কিছু ভেবে উঠার আগেই হঠাৎ দেখি সুহান আমার ঘরে প্রবেশ করলেন। নিজেকে দুই হাত দিয়ে ঢাকার চেষ্টা করলাম। তিনি আমার দিকে.....
......
চলবে
#বর্ষনের_অপেক্ষায়
#Ifrat_Jahan_Mariyam
Pingback: মামাত বোন যখন বউ Part 2
Pingback: বিষাক্ত তনয়া পর্ব -১ | Big Romantic Story
Pingback: শতাব্দী পর্ব-১ | Heart Touching Love Story
Pingback: তোমার আমার প্রেম – পার্ট 13 | Bangla Premer Golpo
Pingback: সিনিয়র খালাতো বোনের প্যারা – পার্ট ২ | Love Story