Linksstories

linksstories` logo
Ex girlfriend যখন বউ | BIG STORY Part 1

Ex girlfriend যখন বউ | BIG STORY Part 1


সাগর,ঐ সাগর।(জয়।হাপাতে হাপাতে)
—কি রে এমন করে দৌঁড়ে কোথা থেকে আসছিস?(আমি)
—কোথা থেকে এসেছি সেইটা জানার থেকেও বেশি দরকারি কথা তোকে বলার আছে।
—কি কথা?
—কালকে রাত ৮ টায় আরহীর বিয়ে।
—কি?(অবাক হয়ে)
—হ্যাঁ।
—কিন্তুু এত তাড়াতাড়ি কিভাবে সম্ভব?
—সেইটা আমিও জানি না।এখন তাহলে কি করবি?
—যেইটা ভেবেছিলাম সেইটাই করব।
—মানে?
—তোর এর মানে জানতে হবে না।তুই শুধু কালকে রাত ৭ টার সময় আমাদের সব বন্ধুদের এখানে আসতে বলে দে।
—কেন?সবাই এখানে এসে কি করবে?
—সেইটা নাহয় কালকেই জানতে পারবি কি করে।তোকে এখন যা বললাম তুই শুধু সেইটুকু কর।
—আচ্ছা।
.
আমি সেখান থেকে বাড়িতে চলো আসলাম।আপনার হয়ত ভাবছেন আমি কে আর এই আরহীটাই বা কে যার বিয়ে কালকে?আসেন তাহলে পরিচয়টা দিয়ে নেই।
.
আমার নাম সাগর।এই শহরের নামি-দামি বড়লোক বাবার দুইমাত্র ছেলে।বুঝতে পারলেন না তো?আরে ভাই আমি আমার মা-বাবার ছোট ছেলে।
.
আমার আগে একটা বড় বোন আর বড় বোন রয়েছে।আমি ছোট হওয়াতে সবসময় নষ্টামি ফাজলামি করে বাড়ির সবাইকে মাতিয়ে রাখি।
.
আর হ্যাঁ আমার বড় বোন আর ভাইয়ের বিয়ে হয়ে গেছে আর আমি এখন ভার্সিটিতে শেষ বর্ষে পড়ি।কিছুদিন পর পরীক্ষা।তারপরেই আমি মুক্ত।
.
আমার বাবা আর বড় ভাই সবসময় আমাদের ব্যবসা দেখাশোনা করে।বাবা আমাকে অনেক বলেছে ব্যবসায় হাত দিতে কিন্তুু আমার এই ব্যবসা করা ভালো লাগে না।তাই আমি অফিসে যাইও না।
.
তাছাড়া বড় ভাই থাকায় বাবাও আমাকে এতটা জোড় করে না।আমি যত দুষ্টুমিই করি না কেন কেউ যদি আমার নামে বাড়িতে এসে বাবার কাছে বিচার দেয় তাহলে আমাকে রক্ষা করার জন্য সবসময় বৌদি আর মা আছে।
.
তারা থাকার কারণে বাবা আমাকে কখনও কিছু বলতে পারে না।অহ!হ্যাঁ।আরহীর কথা তো বলাই হল না।
.
আরহী।নামটা আমার রিদয়ের সব থেকে বেশি কাছের।একটা সময় আমার জীবনের সম্পূর্ণ জোড়ে এই মেয়েটাই বিরাজ করতো।
.
কিন্তুু কালকে সেই মেয়েই বিয়ে।আসলে আরহী আমার Ex-Girlfriend।আরহী তার মা-বাবার একমাত্র মেয়ে।আমরা একই সাথেই পড়তাম।
.
চলুন তাহলে আপনাদের বলি আরহীর সাথে আমার প্রেমটা কিভাবে হয়েছিল আর কিভাবেই বা সব শেষ হয়ে গেল।
.
আমি তখন ভার্সিটির দ্বিতীয় বর্ষে পড়ি।আমি,জয়,রাজু আর বাকি যতগুলো বন্ধু ছিল সবাই বাইক নিয়ে সেইদিন বিকালে ঘুরতে বেরিয়েছিলাম।
.
যেইদিন ঘুরতে বেরিয়েছিলাম তার আগের দিন রাতে বৃষ্টি হয়েছিল।আমি আমার বাইক নিয়ে সবার আগে ছিলাম আর বাইকটা রাস্তায় থাকা জলের উপর দিয়ে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলাম।
.
তখন ভুলবশত আমার বাইকের চাকা থেকে জল পাশে থাকা তিনটা মেয়ের মধ্যে একটা মেয়ের শরীরে গিয়ে লাগে আর মেয়েটা সাথে সাথে চিৎকার করে উঠে আর আমরা বাইক থামিয়ে ফেলি।
.
পিছনে ঘুরে মেয়েটার দিকে তাকাতেই অবাক হয়ে গেলাম।কারণ মেয়েটার চেহারা অনেক সুন্দর।বিশেষ করে মেয়েটার চোখ দুটো বেশি সুন্দর।
.
চোখের দিকে তাকালে মনে হয় চোখে কত মায়া।মেয়েটার চোখ দেখতে দেখতে আমি মেয়েটার সামনে চলে গেলাম।
.
মেয়েটা যে আমাকে বকছে তার দিকে আমার কোন খেয়ালই নেই।আমি শুধু মেয়েটার চোখের দিকেই তাকিয়ে রয়েছি।হঠাৎ করেই আমার মুখ ফোঁটে বলতে শুরু করলাম।
.
জানি না কি আছে তোমার এই চোখে।
তবুও বারবার এই চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে।

জানি না তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে আমি কোথায় হারিয়ে যাই।
তবুও বারবার সেই অদৃশ্য জায়গায় হারাতে মন চায়।

জানি না তোমার এই চোখে কি মায়া আছে।
তবুও মন চায় এই মায়ার মধ্যে সারাজীবন আবদ্ধ হয়ে থাকতে।

তুমি কি আমাকে একটা সুযোগ দিবে তোমার এই মায়ার মধ্যে আবদ্ধ হবার?
কথা দিচ্ছি যতদিন জীবিত থাকব ততদিন এই মায়া ছেড়ে বের হবো না।
.
কথা শেষ করতে না করতেই আমার গালে ঠাসস ঠাসস দুইটা ঠাপ্পর পরল।ঠাপ্পর খাওয়ার পর আমার হুস ফিরল।
.
—কত বড় সাহস।এক তো বাইক দিয়ে আমার কাপড় নষ্ট করে দিয়েছে তার উপর আবার রাস্তা দাঁড়িয়ে বখাটে ছেলেদের মতো মেয়েদের টিস করছেন।(মেয়েটি)
—সরি।আমি আসলে হারিয়ে গিয়েছিলাম।(আমি)
—কোথায়?
—আপনার ঐ গোল গোল দুইটা চোখের মধ্যে।
—আবার?আরও দুইটা দিব নাকি?(হাত দেখিয়ে)
—না না।দুইটা খেয়েই শিক্ষা হয়ে গিয়েছে।
—ভাল শিক্ষা হয়েছে।নাহলে আরও দুইটা দিয়ে শিক্ষা দিয়ে দিতাম।
—তার আর কোন প্রয়োজন নেই।
—কি রে আরহী,তুই এখানে দাঁড়িয়ে ওদের সাথে কি কথা বলছিস?(পূজা।ওরা কিছুদূরে ছিল তাই জানে না মেয়েটির সাথে কি হয়েছে)
—আরে দেখছিস না এক তো বাইক দিয়ে রাস্তার জলগুলো আমার শরীরে দিয়ে আমাকে ভিজিয়ে দিয়েছে তার উপর আবার এখানে দাঁড়িয়ে কবি-সাহিত্যিকদের মতো কবিতা বলছে।
—হয়েছে হয়েছে।তোর আর ওর সাথে ঝগড়া করতে হবে না।তুই ওদের সাথে ঝগড়া করে পারবি না।(জয়া)
—কে বলছে আমি পারব না।ওদের মতো বখাটে ছেলেদের শিক্ষা না দিলে ভাল হবে না।
—ঠিকই বলেছিস ওদের একটা উচিত শিক্ষা দেওয়ার দরকার।সারাদিন বাইক দিয়ে শুধু রাস্তায় ঘুরে আর মেয়েদের উত্তপ্ত করে।
—আপনি কিন্তুুু শুধু শুধু আমাদের নামে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন।(জয়)
—আমি কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছি না।তোরা যেমন ছোটলোক আমি তোদের তেমনি বলছি।
—সাগর,দেখছিস দেখছিস ওর কত বড় সাহস ঐ আমাকে ছোটলোক বলছে।
—ছোটলোক বলেছি বেশ করেছি।যদি বেশি বাড়াবাড়ি করিস তাহলে বখাটে,রাস্তার কুওা,শয়তান,বদমাশ সব বলব।
—সাগর,তুই ওকে চুপ করতে বল।নাহলে কিন্তুু আমি ওকে মেরে ফেলব।তখন কিন্তুু তোরা আমার উপর দোষ দিতে পারবি না।
—কি?তোর এত বড় সাহস তুই আমাকে মারবি?যদি সাহস থাকে তাহলে আমার শরীরে হাত দিয়ে দেখা।তোকে যদি জেলের ভাত না খায়েছি তাহলে আমার নাম পূজা না।
—তোর মতো ছেমড়ির নাম পূজা হলেই কি আর না হলেই বা কি?
—কি আমার নাম নিয়ে কথা বলছিস তোর এত বড় সাহস?আজকে আমি তোকে মেরেই ফেলব।(কথাটা বলেই পীজা জয়ের দিকে তেড়ে আসতে লাগল)
—আয়।সাহস থাকলে শরীরে হাত দিয়ে দেখা।তোর হাত আমি আজকে কেটেই ফেলব।
.
পরিস্থিতি খারাপের দিকে চলে যাচ্ছে দেখে আমি আর বাকি বন্ধুরা জয়কে দূরে সরিয়ে আনলাম আর আরহী আর জয়া পূজাকে নিয়ে চলে গেল।
.
আপনারা হয়ত ভাবছেন অচেনা দুই মানুষ এইভাবে ঝগড়া করে কি কিভাবে আর যেখানে আমার আর আরহীর ঝগড়া করার কথা সেখানে জয় আর পূজা ঝগড়া করল কেন?
.
আসলে পূজা আর জয় কেউ অপরিচিত না।ওরা দুইজন গালফেন্ড-বয়ফেন্ড আর ওদের সম্পর্কটা আমিই করিয়ে দিয়েছিলাম।
.
—কিরে হঠাৎ এমন কি হল যার জন্য তুই পূজার সাথে এমন করে ঝগড়া করছিস?(আমি)
—আরে ওর আর পূজার মধ্যে তো ঝগড়া হয়েছে।(রাজু)
—কবে?
—তুই বেড়াতে যাওয়ার কিছুদিন পর আর সেই ঝগড়া ঠিক করার জন্যই তো জয় তোকে আসার জন্য বারবার ফোন দিচ্ছিল।
—অহ!ঠিক আছে।তাহলে কালকে ভার্সিটিতে গিয়ে সব ঠিক করে দিব।
.
তারপর আমি বাড়িতে চলে আসলাম।রাতে শুয়ে শুয়ে আরহীর কথা ভাবছিলাম।কে এই আরহী?কোথাই বা বাড়ি?
.
ঐখানের আমরা সবাই সবাইকপ চিনি কিন্তুু এর আগে কখনও আরহী মেয়েটাকে দেখি নেই।না কালকে ভার্সিটিতে গিয়ে আগে পূজার থেকে আরহীর সম্পর্কে সব জানতে হবে।
.
কোথায় বাড়ি,কি করে,সবকিছু জানতে হবে।কিছুসময়ের দেখাই কেমন জানি আমাকে পাগল বানিয়ে দিয়েছে।কিছুতেই ভুলতে পারছি না।
.
জানি না মেয়েটার মাঝে কি এমন আছে যার জন্য আমি মেয়েটাকে ভুলতে পারছি না।আরহীর কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরলাম।
.
পরেরদিন সকালে তাড়াতাড়ি নাস্তা করে ভার্সিটিতে চলে গেলাম।ভার্সিটিতে গিয়ে খেলাম আরেকটা ঠাক্কা।
.
#চলবে—————

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top