Linksstories

linksstories` logo
অফিসের রাগী ম্যাম যখন বউ | Short Story

অফিসের রাগী ম্যাম যখন বউ | Short Story


অফিসের রাগী ম্যাম যখন বউ

Amrin Talokder

আমি : ম্যাম আসবো?
বলেই মুখটা হাঁ হয়ে গেলো, অফিসের ম্যামের চেয়ার এ আমি কাকে দেখতে পারছি,হায় আল্লাহ আজ আর আমার এই চাকরিটাও হবে না বোধয়।অনেক আশা নিয়ে এসে ছিলাম।আজ পর্যন্ত গুনে গুনে ১৯ টা ইন্টারভিউ দিয়েছি কিন্তু কোনটাই হয় নি।আর হবেই বা কি করে এই শহরে চাকরির জন্য মামা,খালু লাগে।যা আমার নেই।এত্তক্ষণ কি বললাম বুঝলেন না ত, তাহলে চলুন পরিচয় টা দিয়ে নি।

আমি নিলয়, বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে, একমাত্র সন্তান বললে ভুল হবে কারণ আমার বাবা মায়ের আদরের ভাগ আমার পিচ্চি বোনটাও ভাগ বসিয়েছে।আর আমার পাগলি বোনটা আমাদের পরিবারের সবার চোখের মণি।যাইহোক অনেক ত পরিচয় দিলাম ত চলুন গল্পে ফিরা যাক।

মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হওয়ায়, কোন রকমে ইন্টার পাস করেই ঢাকা শহরে পা দেই জীবিকার তাগিদে। কিন্তু ঢাকা শহরে এক বেলা চাইলে খাবার দিবে কিন্তু কেও চাকরী দিবে না,কারণ এই ব্যস্ততম শহরে সবাই যার যার স্বার্থের পিছনে দৌড়ায়।যাইহোক অনেক খোঁজাখুঁজি করে একটা মেসে উঠে পরি।

সকালে ঘুমিয়ে আছি, আজকে একটা অফিসে ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার কথা,কিন্তু রাত্রিতে আপনাদের জন্য গল্প লিখতে লিখতে
দেরিতে ঘুমানোর জন্য সকালে উঠতে দেরি হয়ে যায়। তাই তারাতারি রেডি হয়ে কোন রকম দৌড়াচ্ছি অফিসে যাওয়ার জন্য, অবশ্য নিজের অফিস নয়,ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছি।হঠাৎ করেই অফিস গেটে একটা মেয়ের সাথে ধাক্কা ৱেগে পরে যাই। হাতে থাকা সকৱ কাগজ পত্র রাস্তায় নোংরা যায়গাতে পরে যায়। সেটা দেখে ত মেজাজটা গরম হয়ে যায়।এমনেতেই দেরি হইছে তারর উপর আবার একটা আপদ জুঁটলো যে অফিসে ডুকতে না ডুকতেই বাধা হই দারালো,।

যাইহোক কাজগ গুলোর দিকে একবার তাকিয়ে ঠাসসস ঠাসস করে মেয়ের দু গালে বসিয়ে দিলাম,আর বলতে লাগলাম
আমিঃ চোখে দেখে চলতে পারেন না,জানেন কত্ত কষ্ট করে এই অফিসে কাজের জন্য ইন্টারভিউ দিতে আসচ্ছি, সব ত নষ্ট করে দিলেন আজাইরা লোক।

বলেই সেখান থেকে চলে আসলাম একটা কম্পিউটার দোকানে, সেখান থেকে আবার কাজগ গুলো নতুন করে তৈরি করে আবার অফিসের দিকে রওনা দিলাম,আর অফিসে ডুকার পর ত কি হলো তা ত জানেন ই।

ম্যাম: জ্বি আসুন ভিতরে।(চান্দু তোরে ত পাইছি এবার তোর কত্ত বড় সাহস তুই আমার গালে চর মেরে চলে যাস,তোরে না দেখে ছারছি না)মনে মনে ভাবতেছি।

আমি: ম্যাম আআআপনি, আসলে ম্যাম বুঝতে পারিনি, আসলে....
আর কিছু বলতে দিলো না,আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলতে শুরু করলো.

ম্যাম:আপনার নাকি কি?কোথায় থাকেন,কি কাজ করছেন আগে?বাসায় কে কে আছেন.?বিয়ে করছেন নাকি পছন্দের কেও আছে?

একে বারে এত্ত গুলো প্রশ্ন শুনে কেমন যেন নার্ভাস হই গেৱাম,কোনটা রেখে কোনটা উত্তর দিব, বুঝতেছি না।তাই ম্যামকে বললাম..
আমিঃ আসলে ম্যাম এত্ত গুলো প্রশ্ন কোনটা রেখে কোনটা উত্তর দিব আগে বুঝতেছি না,আর এগুলোর মধ্যে ত প্রায় গুলোই আমার পার্সোনাল বিষয়।জবের সাথে পার্সোনাল প্রশ্ন করাটা কি যুক্তিযুক্ত??

ম্যাম :আপনার কাছে কি জানতে হবে কোনটা যুক্তিযুক্ত নাকি কোনটা অযুক্তিপূর্ন?বস কি আপনি নাকি আমি, এই অফিসে কাজ করতে চাইলে সব ডিটেইলস দিতে হবে.আপনি পারবেন সব কিছু বলতে?

তার পর আমি একে একে সব কিছু বলে দিলাম আপনারা ত জানেনই সব কিছু তাই আর আপনাদের আবার আর বললাম না,সব কিছু শুনার পর ম্যাম বললো এই এগ্রীমেন্টে সাইন করুন।

আমিঃ এটা কিসের এগ্রীমেন্ট ম্যাম??

ম্যামঃ আবার প্রশ্ন করেন, এত্ত বেশি কথা বললে চাকরী করতে পারবেন না, কথাটা মাথায় ডুকিয়ে রাখবেন।

বুঝতে পারলাম যে তখনকার প্রতিশোধ নিতেই ম্যাম আমার চাকরীটা দিয়েছে, কারণ তখন যে জোরে জোরে চর মেরে চলে গেছিৱাম তাকে কথা না বলতে দিয়েই তার প্রতিশোধ তুৱতেই এগ্রিমেন্টেও সাইন নিয়েছে।আল্লাহ তায়লা ভালো জানে কি যে হবে।

ম্যাম: মি: নিলয়, কি বেপার আপনি অফিসের প্রথম দিনই লেট,এভাবে চলতে থাকলে ত অফডসে চাকরী করতে পারবেন না,আপনার কি সমস্যা, বাসায় বউ বাচ্চা আছে নাকি যে লেট হয়?

আমিঃ ম্যাম,আসলে ঘুম থেকে উঠতে লেট হই গেছিলো.....

ম্যাম আর আমাকে কিছু বলতে না দিয়ে ইচ্ছে রকম বকাঝকা করে কেবিনে যেতে বৱলো,কিন্তু আমি ত কিছুই চিনি না,আমার কেবিন কোনটা সেটাও জানি না,আর কাজই বা কি করতে হবে কিছুই জাানি না,কারণ এটাই আমার লাইফে প্রথম জব,কি কাজ হবে এসব ভাবতে ভাবতে।

ম্যাম: কি বেপার আপনাকে না আপনার কেবিনে যেতে বললাম,এখনও এখানে দারিয়ে আছেন কেন,যান এখান থেকে,আর যাওয়ার আগে এই ফাইল গুলো নিয়ে যান,দু ঘন্টার মধ্যে সকল ফাইল রেডি করে দিবেন।

আমি: ম্যাম,আসলে আমার কেবিন কোনটা জানি না,আর কাজটা যদি একটু বুঝিয়ে দিতেন তাহলে সুবিধা হতো করতে।আমি ত কখনও জব করিনি।

ম্যাম: কিহহহ,আমি কাজ বুঝিয়ে দিব আপনাকে,???আপনার এত্ত বড় সাহস হলো কি করে আমাকে অর্ডার করেন কাজ বুঝাই দিতে।

আমি: স্যরি ম্যাম
বলেই সেখান থেকে চলে আসি ফাইল গুলো নিয়ে,বাইরে এসে একটা স্টাফকে জিগ্যেস করলাম যে আমি নিলয়, আমি অফিসে নতুনন,আমার কেবিনটা কোথায় বলতে পারবে কিনা?
জিগ্যেস করা মাত্রই আমার কেবিনটা দেখিয়ে দিলো,যাক ভাবা অবশেষে একজন ভালো মানুষ এই অফিসেও পাওয়া গেলো,বস এমন রাগি আর স্টাফ গুলো কত্ত শান্তশিষ্ট। ভাবতেই অবকা লাগে।যাইহোক আমার এত্ত কিছু ভেবে লাভ নাই।পাশে একজন কলিগ দেখলাম তাকে ডাক দিলাম এবং কাজ গুলো বুঝে নিচ্ছিলাম।এমন সময়....

ম্যাম: মি. নিলয়, এখানো কি কাজ করতে আসচ্ছেন নাকি প্রেম করতে আসচ্ছেন,এত্ত হাসাহাসি করে কথা বলার সময় পান কই।আপনাকে যে ফাইৱ গুলো দিছি সেগুলো রেডি করছেন?

আমি: ম্যাম ফাইল গুলো এই আপুর কাছ থেকে বুঝে নিচ্ছিলাম,তারপরই ফাইলের কাজ গুলো করবো ভাবছিলাম।

ম্যাম: এখানে আপনাকে ফাইল রেডি করতে বলছি,কারও থেকে সাহায্য নিতে বলিনি,আপনি এখানে সাহায্য নেওয়ার সাহস কই পাইছেন,আর এই যে মিস. তানিয়া আপনি তাকে সাহায্য করার সাহস কই পাইছেন?আমি কি আপনাকে বলছি তাকে সাহায্য করুন?.

তানিয়া: আসলে ম্যাম.......

তানিয়া কে কিছু বলতে না দিয়েই তানিয়ার গালে জরো জোরে দু টা থাপ্পড় মেরে দিলো,আমি ভাবতেছি আবার আমাকেও মারবে নাকি,কিন্তু না, তানিয়া থাপ্পড় মেরেই হনহন করে চলে গেলো।

আমিঃ স্যরি আপু, আমি বুঝতে পারিনি এমন কিছু ঘটবে,আগে যদি জানতাম আমার জন্য আপনাকে এমন পরিস্থিতি তে পরতে হবে তাহৱে কখনও আপনার কাছে সাহায্য চাইতাম না,

তানিয়া: আরে বাদ দেন ত, কাজ যতটুকু বুঝিয়েছি ততটুকু ত বুঝতে পারছেন?এখন কাজে মনোযোগ দিন,না হয় আবার কিছু বলবে আপনাকে।

তার পর আর কি বসে বসে কাজ করতে লাগলাম,তানিয়া মেয়েটা অনেক সুন্দর করে কাজটি বুঝানোর ফলে কাজে বেগ পেতে হলো না,খুব সহজেই কাজটি ১ ঘন্টার মধ্যে শেষ করে ফেলেছি।তারপর কাজ গুলো শেষ করে ম্যামের কেবিনে জমা দিতে গেলাম

আমি: ম্যাম আসবো?

ম্যাম : হুমম, আসেন, বসেন এখানে, কি জন্য আসচ্ছেন?

আমি: ম্যাম,আপনার ফাইল কাজ গুলো শেষ করে নিয়ে আসলাম।।

ম্যাম: কিহহহ,এত্ত তারাতারি কিভাবে সম্ভব, আপনি তানিয়ার সাহায্য নিছেন,তানিয়া আপনার কাজ করে দিয়েছে তাই না?

আমি: না,ম্যাম,আমি নিজেই করেছি,

ম্যাম: আরও এই ফাইল গুলো নিয়ে যান, আর ১ ঘন্টার মধ্যে ফাইল গুলো জমা দিবেন।

বলেই ম্যাম আমার দিকে ফাইল গুলো ডিল মেরে দিয়ে দিলো।।আমি ফাইল গুলো নিয়ে আমার ডেস্কে বসে আবার কাজ করতে ছিলাম,হঠাৎ কখন যে লান্সের সময় হয়ে গেছে বুঝতেই পারিনি,

তানিয়াঃ এই যে মি. দুপুরের লান্স করবেন না?লান্সের সময় ত শেষ হতে চললো?

আমি: না মিস তানিয়া,আপনি যান, আমার খাবার খেতে দেরি হবে,হাতের কাজ গুলো শেষ করে তবেই খাবো।

তানিয়াঃ আরে রাখেন ত মিস তানিয়া বলা,আমি আর আপনি হয়ত প্রায় সমবয়সী, তাই নাম ধরে ডাকতে পারেন,আর বন্ধু ভাতে পারেন।

আমি: বন্ধু হলে ত আপনি বলা যাবে না,তুই করে বলতে হবে, পারবেন ত বলতে?

তানিয়া: আচ্ছা বলবো বাবা, এখন ত চল যাই।

আমি: আচ্ছা চল, খুব খুদাও লাগছে, খুদায় পেঁটে ইঁদুর দৌড়াচ্ছে,

তার পর দুজন মিলে অফিসের ক্যান্৫িনে বসে দুপুরে খাবার খাচ্ছি আর একটা বিষয় নিয়ে কথা বলছি আর হাসতেছি।হঠাৎ করেই যমের আগমণ হলো,বুঝলেন না ত কাকে যম বলছিোআরে ভাই আমাদের অফিসের বস,

ম্যাম: কি বেপার অফিস ক্যান্টিন কি প্রেমের আড্ডা খানা বানাই ফেলছেন নাকি,এটা কোন ফাইভ স্টার জোটেল বা কোন চিপকাচিপকির রেস্টুরেন্টে না,যে যা মন চাইবে তাই করবেন,তারাতারি খাবার খেয়ে ডেস্কে যান যার যার,আর যা কাজ দিয়েছি সেগুলো সময় মতো যেন আমি পাই,না হলে যে কি করবো আমি নিজেও জানি না।

বলেই হনহন করে চলে গেলো,ম্যাম,যা ভাবা এত্ত গুলো কথা বলার মানে হয়,বুঝলাম না বিষয়টা এটা মেয়ে নাকি ধানি লঙ্কার ছোট্ট বিচি,এত্ত দেমাগ বড় লোক বলে কি আমাদের মানুষ ভাবে না,যা মন চাইবে তাই কি আমাদের উপর চাপিয়ে দিবে,আমাদের সাথে কি ভালো ব্যবহার করতে পারে না(মনে মনে ভাবছিলাম,হঠাৎ করেই তানিয়ার ডাকে ভাবনার ছেদ গঠলো)

তানিয়াঃ কি বেপার মি. নিলয়,ম্যাম ত এমন করে না কারো সাথে আপনার সাথে যে থাকে তাকে ত ঝারে ঝারেই, আপনাকেও ঝারে কারণটা কি জানতে পারি,আপনি কি তার কাছের কেও নাকি হুমমম,সামথিং সামথিং নাকি ভাই???হিহিহিহিহহি

আমি: আরে কি বলিস এসব, সামথিং সামথিং হবে কেন তাহলে শুন ম্যাম কেন এমন করে আমার সাথে,
তার পর তানিয়াকে সব কিছু খুলে বললাম, ইন্টারভিউ দিতে আসার সময় কি কি হয়েছিল ম্যামের সাথে সব কিছু শেয়ার করলাম তানিয়ার সাথে, আর তানিয়া হাসতে হাসতে মাটিতে লুটিয়ে পরছে.

তানিয়াঃ তুই ভাই একটা চিসসস,যা বিনোদন দিয়েছিস ম্যামের সাথে এমন কাজ করেও তার পর তুই এই অফিসেই জব পাইছিস সাবধানে থাকিস রে ভাই,ম্যাম যেরকম জেদি তেমন রাগী, ম্যাম যা চায় তাই তার করে নেয়।আর একবার যদি কোন কিছুর উপর জিদ উঠে ত সেই জিনিসটাকে তছনছ করে দেয়।

আমিঃ কি রে ভয় দেখাচ্ছিস নাকি সাবধান করতেছিস,কোনটা তোর এমন কথা শুনে আমি ভয় পাবো নাকি রে কুত্তী।

বলেই খাবার শেষে সেখান থেকে চলে এসে নিজের ডেস্কে বসে কাজ করতে থাকি, সময় মতো খুব সুন্দর করে ফাইল গুলো রেডি করে ম্যামের রুমে যাই।ম্যামকে সব ফাইল বুঝিয়ে দিয়ে চলে আসতে যাবো এমন সময় ম্যাম পিছন থেকে ডাকে.

ম্যামঃ এই যে মি. নিলয়, কি করছেন এগুলো, এগুলো কোন ডিজাইন নাকি,এগুলো ডিজাইন কি আমি করতে দিয়েছি নাকি?কি সব করছেন আবল তাবল,যান গিয়ে ২৫ মিনিটের মধ্যে সব গুলো আবার সুন্দর করে তৈরি করবেন, না হলে আজকে আপনার ছুটি নেই।

বলেই ম্যাম আমার দিকে তৎক্ষনাৎ ফাইল গুলো ছুরে মারলো,একটা ফাইল আমার চোখের উপরে এসে কেটে যায়,এবং অনেক রক্ত বের হতে শুরু করে, কিছুক্ষণ এর মধ্যে রক্ত ফ্লোর ভেসে যায়।আর আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি,যখন জ্ঞান ফিরে তখন আমি একটা বেডে নিজেকে আবিস্কার করতে পারি,এত্ত সুন্দর বেড, এত্ত সুন্দর রুম আমি কোথায় তাই ভাবতে ছিলাম,হঠাৎ করেই ম্যামে ডাকে ধ্যান ভাঙ্গলো.

ম্যাম: কি নিলয় সাবেক জ্ঞান ফিরেছে তাহলে?আসলে আমি তখন বুঝতে পারিনি যে এমন কিছু হবে,রাগের মাথায় এমন করে ফেলছি প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দেন।

আমিঃ ছি ছি ম্যাম,কি বলছেন এসব, আপনারা বড়লোক মানুষ আমরা সামান্য আপনার কর্মচারী।ভুল কাজ করলে আপনার রাইট আছে বকাবকির করার।আমি কিছু মনে করিনি,কিন্তু আমি এটা কোথায় ম্যাম??

ম্যাম: ওই ম্যাম বলে আর ডাকবে না,আমার নাম ধরে ডাকবে নিলা বলে।শুধুই নিলা বলে,

আমিঃ মানে কি বলছেন ম্যাম এসব আপনার মাথা ঠিক আছে ত নাকি, আপনার ভুত বা জীনে ধরছে নাকি?

ম্যামঃ আমার কিছু হয়নি তুমি অসুস্থ তাই এমন মনে হচ্ছে, আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি নিলয়,যেদিন তোমায় প্রথম দেখি সেদিনই ভালোবেসে ফেলি কিন্তু সেদিনের বঢাহারে তোমার প্রতি অনেক রাগ, জিদ চেপে ছিল,তাই এত্ত দিন কষ্ট দিয়েছি,ভাবছি তুমি সব ছেলেদের মতো খারাপ ছেলে,কিন্তু আজ কেন জানি না মন মানছে না, তোমায় বলে দিতে মন চাচ্ছিলো বারে বার তাই ত তোমায় বলে দিলাম সত্যি অসম্ভব রকম ভালোবাসি তোমায়।প্লিজ ফিরিয়ে দিও না,

আমিঃ ম্যাম ব্রামুন হয়ে চাঁদে হাত দেওয়ার ইচ্ছে আমার নাই,জীবনে আমার থেকেও বেটার কাওকে পাবেন,আপনি আমার বস আর আমি আপনার কর্মচারী, যদি কেও জানতে পারে তাহলে আমাকে সবাই লোভী ভাব্বে, তাই আমি এসব কিছুতে জরাতে চাই না, আমি যাবো.....

ম্যামঃ যাবা মানে কই যাবা তুমি হুমম,আজকেই বিয়ে করতে হবে,আজ রাত্রিটাই হবে আমাদের বাসর রাত্রি,তোমার জ্ঞান ফিরার অপেক্ষায় বসে ছিলাম,যে কখন জ্ঞান ফিরবে আর কখন তোমায় নিয়ে নতুন জগৎ এ পা দিব।আমি আর একটু সময় ব্যায় করবো না,উঠো এই নাও শেরওয়ানি, তারাতারি পরে আসো, নিজে কাজি অপেক্ষা করছে।

আমিঃ দেখেন ম্যাম এটা কখনও সম্ভব না,আমি পারবো না মানে পারবো না,আমি বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে তাদের অনুমতি ছারা আমি কোন কাজ করি নি আর আমি নাকি করবো বিয়ে এটা ত অসম্ভব জিনিস,এত্ত বড় কাজ আমি করতে পারবো না ম্যাম।

ম্যাম: তোর পরিবারের সম্মতি চাই ত তাই না,ওকে অপেক্ষা কর ৫ মিনিট তাই পেয়ে যাবি,

বলেই ম্যাম হনহন করে নিচে চলে গেলো,আর আমি এক হাতে বসে শেরওয়ানি টা হাত বুলিয়ে দেখছি।মনে হচ্ছে অরেক দামী একটা ড্রেস, হঠাৎ করেই তরজায় কড়া নরতেই দরজার দিকে তাকালাম,দরজার দিকে তাকিয়ে ত আমি অবাক, গ্রাম থেকে মা বাবা সহ ছোট্ট বোনটি এসেছে,কিন্তু নীলা ম্যাম আমার পরিবারের কথা জানলো কিভাবে।যাইহোক এত্ত ভেবে লাভ নাই,দেখি আম্মু আব্বু কি বলে।

বাবা: নিলয়, বাবা মামণীকে বিয়ে করে নে,মামনী খুবই ভালো একটা মেয়ে, তুই সুখী হবি।

আমিঃ বাবা তুমি জানো না,সে আমার অফিসের বস,আর তার চেয়ে বড় কথা আমি তাকে বিয়ে করবো না।

বাবা: তুই করবি না মানে তোর বাপ করবে। তারাতারি শেরওয়ানি পরে নিচে আয়।

দুর ভালো লাগে না,আর কি যে করি, শেরওয়ানি পরে নিচে গেলাম,বিয়ের সকল কাজ সুন্দর করে শেষ হলো বাসর ঘরে বউ বসে আছে আর আমি ছাদে দারাই আছি,ভাবতেছি কি থেকে কি হয়ে গেলো,ছিলাম সিঙ্গেল হই গেলাম বিবাহিত, তাও আবার মাত্র কিছু সময়ের মধ্যে। হায় আল্লাহ বউ যে কেমন হবে কে যানে,রাত্রির ছাদে একা একা দারাই আছি দেখে বাবা নিচ থেকে উপরে এসে বললো বাসর ঘরে যেতে,বাবা কে আর কিছু না বলে চলে গেলাম বাসর ঘরের দিকে,বাসর ঘরের সামনে দারাই আছি ভাবতেছি বউ কি করবে।।

আপনারা ত জানেনই বিয়েটা কিভাবে জোর করে করলো তাই কাওকে জানানো হয় নি,আমার ইচ্ছে ছিল মহা ধুমধাম করে বিয়ে করার কিন্তু তা আর সম্ভব হলো না,তাই কিছু টা মন খারাপ।

বাসর ঘরে ডুকতেই বউ দেখি ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরে বসে আছে,দেখেই ত মনটা খারাপ হয়ে গেলো,বিয়ে করলাম বাসর রাত্রিতে বউ সাজে বউ এর মুখ দেখবো তা না, সে নতুন স্টাইলে বসে আছে।

আমি: কি বেপার নীলা,তোমার বউ সাজে বসে থাকার কথা ছিল না?

নীলা ঃ ঠাসসসস,ঠাসসসস,কুত্তার বাচ্চা কে নিলা, আমি তোর ম্যাম,তোর জীবনটা নরক করতেই তোরে বিয়ে করা, মনে আছে তুই আমারই অফসের সামনে আমাকে থাপ্পড় দিয়েছিলি,সেটা আমি নিতে পারিনি নি,সেদিনই আমি ভেবে নেই তোর জীবনটা নরক করে তুলতে যা যা করতে হবে সব করবো।

আমি: তাহলে এগুলো আপনার অভিনয় ছিল,এই বিয়েটা করার কি দরকার ছিল,বিয়েটা কি ছেলে খেলা মনে করেন?বাঙ্গালী মেয়ের জীবনে একবারই বিয়ে হয়।আর আপনি সেই বিয়ে কে ছেলে খেলা মনে করেন?
নীলাঃ কুত্তার বাচ্চা চুপপপপ,তোর কোন কথা বা জ্ঞান শুনার সময় নাই।আমাকে স্পর্শ করার চেষ্টা করবি না,কখনও স্বামি অধিকার দেখাতে আসলে মেরেই ফেলবো একদম

আমি আর কিছু না বলে সোভাতে ঘুমাই গেলাম,বুঝতে পারছি যে একটা থাপ্পড় এর প্রতিশোধ নিতেই এমন করলো আমার সাথে। যাইহোক তাকে ডিভোর্স দিয়ে দিব,থাকবো না তার সাথে, এভাবেই চলছে তার সাথে পথচলা,প্রতিদিনই তার করা অত্যাচার গুলো বেড়েই চলছে,সব কিছু মুখ বুজে সহ্য করে নিচ্ছি।কিন্তু হঠাৎ করেই একদিন মাথা ঘুরে পরে যাই, শরীরটা বড্ড ক্লান্ত থাকায় আর অত্যাচার সহ্য করতে করতে নিজকে ধরে রাখতে পারি নি আর।

যখন জ্ঞান ফিরে দেখি আমি ম্যামের কোলে মাথা রেখে শুইয়ে আছি সাথে সাথে আমি ম্যামের কোল থেকে মাথা সরাই নিয়ে যাই,কিন্তু ম্যাম মানে নিলা সে তার কোলে মাথা আবার টেনে নিয়ে যায়।

আমি: মিস ম্যাম,আর চাই না কারও এমন মিথ্যে ভালোবাসা,তাই আমাকে ছেরে দেন আমি ঠিকই সুস্থ হই যাবো,আর আজকে কত তারিখ ম্যাম?

নিলা: কেন আজ ত ২৩ জুলাই ২০২৩ কেন?তারিখ দিয়ে কি করবা?

আমি: আজকে ডিভোর্স লেটার আসবে, আপনি আজ থেকে মুক্ত, ভালো থাকবেন, আর আপনার অত্যাচার ভালো লাগছে না।

নিলা: না, নিলয় প্লিজ আমায় মাফ করে দেও,আমি ভুল বুঝে তোমাকে এত্ত দিন এমন করেছি, আমায় ক্ষমা করে তেও,আমি আর জীবনেও তোমার সাথে এমন করবো না,তুমি যখন জ্ঞান হারিয়ে নিচে পরে যাচ্ছিলে, তখনও আমি তোমাকে ধরি নি জান,যখন দেখি তুমি সত্যি জ্ঞান হারাইছো তখন আমি তোমাকে কোনরকম ভাবে বেডে শুইয়ে দিয়ে ডাক্তার কে ফোন দিতে যাই তখনই তোমার বেডের পাশে একটা ডায়েরি দেখতে পাই,ডায়েরির সব কিছুই আমি পরেছি,এবং আমি আমার ভুল বুঝতে পারছি নিলয় প্লিজ আমায় ক্ষমা করে দেও।আমি তোমাকে আর কোন দিন কষ্ট দিব না,প্রমিজ।

আমিঃ কলিয বেল বাজতেছে, দরজা খুলতর হবে যেতে দিন।

নীলা : তোমায় খুলতে হবে না,আমি দেখতেছি এখর থেকর সব কাজ আমিই করবো জান,তোমায় একটুও কাজ করতে দিব না,তুমি আমায় ছেরে যেও না।

নীলা কলিং বেল খুলতেই একজন উকিল দেখতে পায়,উকিল আমার কথা বলতেই নিলার মনে ভয় ডুকে যায় তাহলে কি সত্যি নিলয় আমাকে ডিভোর্স দিচ্ছে।ভেবেই দরজার সামনে জ্ঞান হারায় নীলা,আমি তৌড়ে যেয়ে নিলাকে তুলে বেডে নিয়ে যাই,এবয ডাক্তার আন্কেলকে ডেকে নিয়ে আসি ফোন করে।

ডাক্তার আন্কেল সব কিছু দেখে আমাকে তাকে যত্ন নিতে বললোো।আর তাকে বেশি চিন্তা করতে নিষেধ করা হলো।

আমি ডাক্তার আন্কেলকে বিদায় দিয়ে নিলার পাশে বসে আছি,আর তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি,মন চাচ্ছে তার কপালে ভালোবাসার পরশ এঁকে দেই কিন্তু সাহস পাচ্ছি না,যদি কিছু বলে।

হঠাৎ করেই নিলা চোখ খুলে আমাকে জোরে জরিয়ে ধরে ঠোঁট এ কিস করে বসে, আমি বুঝতে না পেরে ভয় পেয়ে যাই,কিন্তু পরক্ষণেই নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে পাহলি বউটার সাথে রেস্পন্স করতে থাকি।

তার পর আর কি পাগলি বউটাকে অসম্ভব রকম ভালোবাসতাম,তাই আর কষ্ট দিতে চাই নি তাই মেনে নিয়ে তাকে আদর করতে থাকি। আর ডাইয়েরি মধ্যে আমার আর নিলার কথাই লিখা ছিল,যেখানে নিলাকে নিয়ে প্রতিদিন কাব্য রচনা করা হতো

দোয়া করবেন আমরা যেন সারাজীবন এভাবে সুন্দর ভাবে কাটাতে পারি,আর হ্যাঁ ধন্যবাদ এতক্ষণ গল্পটি পরার জন্য

সমাপ্ত

About The Author

3 thoughts on “অফিসের রাগী ম্যাম যখন বউ | Short Story”

  1. Pingback: মামাত বোন যখন বউ Part 2

  2. Pingback: বর্ষনের অপেক্ষায় পার্ট 1 | Romantic Love Story

  3. Pingback: স্নিগ্ধ ভালবাসা পার্ট 3 | ইসলামিক লাভস্টোরি - Links Stories

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top