Amrin Talokder
আমিঃ এক খান চুম্মা দে, এক খান চুম্মা...........
ঠাসসস ঠাসসস করে চার চারটা শব্দ হলো,কিসের শব্দ বুঝলেন না তো,রাস্তায় হাঁটতেছিলাম কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনতে শুনতে আর গাইতে ছিলাম,হঠাৎ করে গালে কিছু পরার জন্য কানে থেকে হেডফোন পরে যায়,
উপরের দিকে তাকিয়ে দেখি একটা মেয়ে আমার দিকে রাগে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।মনে হচ্চে আমাকে এখরই কাঁচা চিবিয়ে খাবে।
আমিঃ এই যে মিসেস: আপনি আমার দিকে এমন করে তাকিয়ে আছেন কেন??
মেয়েটিঃ তাকিয়ে আছি কেন জানিস না?নাকি আরও চারটা খেতে ইচ্ছে করছে?বেয়াদব ছেলে পেলে কোথাকার।
আমিঃ এই যে মিসেস : কাকে বেয়াদপ বলছেন?আর কে আপনি? আপনি আমার গালে থাপ্পড় কেন দিছেন?আর বলতেছেন আমি বেয়াদব
মেয়েটিঃ তুই তুই তোরে যে কি করবো আমি, মনে চাচ্ছে তোরে এখনই মেরে ফেলি,রাস্তায় মেয়ে দেখলে কি ইভটিজিং করতে ইচ্ছে করে লুইচ্চা কোথাকার।
আমিঃ আরে তখন ধরে যা ইচ্ছে বলে যাচ্ছেন, আমি করছি টা কি আপনাকে,আর আপনাকে তো আমি দেখিনি তো কিভাবে ইভটিজিং করলাম,নাকি আপনার পায়ে পারা দিয়ে ঝগড়া করার ইচ্ছে আছে??
আরে থামেন ভাই, অনেক দুর চলে আসলাম এখনও পরিচয় টা দিতে পারলাম না,আমি আমরিন তালুকদার, বাবা মায়ের এক মাত্র সন্তান, ছোট্ট বেলা থেকে ইচ্ছে ছিল ডাক্তার হওয়ার,সেজন্য এসএসসি পাস করার পর মেডিকেল ডিপ্লোমা করার জন্য ঢাকা আসি,ঢাকাতে আমি এই প্রথম, তাই একা একাই একটু ঢাকার চার দেওয়ালের প্রকৃতি দেখতে বের হইছি,আর এই অবস্থা, আমি নাকি রাস্তায় মেয়েদেরকে ইভটিজিং করি,আপনারাই বলেন তো আমি একটা সাদা সিদে ছেলে আমাকে কি ইভটিজার মনে হয়??
যাইহোক অনেক পরিচয় দিলাম আমার, তো চলুন গল্পের নাইকার পরিচয় টা জেনে নেই।
আমি ফাতেমা আক্তার, বাসা বরিশাল, ইচ্ছে ছিল ঢাকা ভার্সিটি কিন্তু ভাগ্য না থাকায় ট্রমা আইএমটি এন্ড ম্যাটস্ এ ভর্তি হতে হয়,আর কলেজ শেষে বাসায় যাচ্ছিলাম আমি ও আমার বান্ধবী, আর রাস্তার মাঝে ছেলেটি আমাদের দেখে গান বলতে ছিল,আপনারা তো জানেই,তাই রাগ হই,মেয়েদের দেখে বাজে গান বলার জন্য, তার পর তো আপনারা জানেনই।
ফাতেমাঃ কিহহহ,আমি পায়ে পারা দিয়ে ঝগড়া করি
বলেই আমি ছেলেটির দিকে তেরে যাই,আর এদিকে আমার বান্ধবী আমাকে আটকিয়ে দেয়,কারণ অনেক মানুষ এত্তক্ষনে ঝরো হই গেছে,তাই বেশি কথা না বারিয়ে চলে গেলাম বাসায়,আর শাসিয়ে আসলাম আমার সামনে যেন আর না পরিস
আমিঃ হায় আল্লাহ, আমি তো হেডফোন দিয়ে গান শুনতে ছিলাম,আর গান বলতে ছিলাম, তাহলে আমি কিভাবে মেয়েদেরকে ইভটিজিং করলাম বুঝলাম না বিষয়টা(মনে মনে ভাবতেছি, আর সেখান থেকে চলে আসলাম)
সেখান থেকে চলে রুমে এসে পরলাম, কারণ মুডটাই নষ্ট হই গেছে আর ঘুরতে ইচ্ছে করতেছে না,তাই রুমে এসে খেয়ে একটা ঘুম দিলাম একদম ঘুম
ফাতেমাঃ কিরে তোরে না বলছি তুই আমার সামনে যেন না পরিস, আর তুই ট্রমা আইএমটি এন্ড ম্যাটস্ এ পরিস?
আমিঃ জ্বি আমি ট্রমা আইএমটি এন্ড ম্যাটস্ এ রেডিওলোজী এন্ড ইমেজিং ডিপার্টমেন্ট এ লেখাপড়া করি কিন্তু আপনি শুনে কি করবেন
ফাতেমাঃ মুখে মুখে তর্ক করিস, আমি তোর সিনিয়র, কথাটা মাথায় রাখিস,আর শুন আমাকে দোকান থেকে সকালের নাস্তা কিনে দিয়ে যা।
আমিঃ কিহহহ,আমি এখানে লেখা পড়া করতে আসচ্ছি, কারও হুকুম শুনার জন্য না, বা অপরিচিত কারও কাজ করে দিতে না, আল্লাহ হাফেজ
ফাতেমাঃ কিহহহ তোর এত্ত বড় সাহস তুই আমার মুখের উপর কথা বলিস
(বলেই ছেলটার কলার ধরে আমার কাছে টেনে নিলাম)
আমিঃ মেয়েটি আমার শার্টের কলার ধরে তার একদম কাছে টেনে নিলো,তার নিশ্বাস আর আমার নিশ্বাস ফেলার শব্দ শুনতে পাচ্ছি,নিজেকে এক নেশার ঘোরে নিয়ে যাই,জীবনে প্রথম কোন মেয়ের এত্ত কাছে এসেছি, তাও আবার সিনিয়র আপু নাকি, নিজেকে কন্টোল করে রাখা সম্ভব হচ্ছে না,তাও পাবলিসিটি বলে কিছু করতেও পারতেছি না,কিন্তু মেয়েটি আমাকে ছারতেছেই না,শার্টের কলার ধরে আছে আর রাগে ফুসচ্ছে।
নিজের কন্টোল হারিয়ে তার ঠোটের স্পর্শ নিতে শুরু করি,আমার এমন কিছু করাতে মেয়েটির চোখ বড় বড় হই গেছে।সে তার সর্বচ্চো শক্তি দিয়ে প্রাণপণ চেষ্টা করতেছে,নিজেকে ছারিয়ে নিতে,কিন্তু আমার শক্তির সাথে পেরে উঠতেছে না,এক সময় তার চোখের কোণে বিন্দু বিন্দু পানি জমতে থাকে,তা দেখে নিজেকে অনেক ছোট মনে হলো,তার পর নিজেকে সংযত করে তাকে ছেরে দিলাম,তাকে ছেরে দেওয়ার পর সে জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে শুরু করছে আর হাপাচ্ছে।
আমিঃ স্যরি আসলে........
ফাতেমাঃ চুপপপ,আর একটা কথাও না,তুই জানিস তুই কি করছিস?
আমিঃ (মাথা নিচু করে দারিয়ে আছি কারণ, সত্যি আমি এটা কি ভাবে করলাম তাই ভেবে পাচ্ছি না,আমার দ্বারা এটা হবে কখনও ভাবিনি) ভাবতেছি এমন সময় মেয়েটি আমার গালে ঠাসস৷ করে দুইটা থাপ্পড় লাগিয়ে চলে যায়।
জীবনের প্রথম দিন কলেজ লাইফ, কিন্তু এমন হবে কলেজ লাইফের প্রথম দিন কখনও ভাবিনি, তবে মনে মনে কেমন যেন ভালো লাগতেছে, জীবনে প্রথমে কোন মেয়ের ঠোঁটের স্পর্শ, আর সেটা যদি হয় সিনিয়র আপু, তাহলে তো কথাই নেই।তার পর আমিও সেখানে আর দারিয়ে না থেকে চলে গেলাম কলেজে,কলেজের প্রথম দিন থাকায় কোন ক্লাস হলো না,পরিচিত পর্বের শেষে বাসায় চলে আসলাম।আর ওই দিকে।
ফাতেমাঃ মুন্নি, ছেলেটাকে একটা সায়েস্তা করতে হবে,ও আজ আমার সাথে যা করছে তা শিক্ষা না দিয়ে আমি ওরে ছারবো না।
মুন্নিঃ কি করবি?
ফাতেমাঃ ওরে এমন শিক্ষা দিব ও কখনও কোন মেয়ের দিকে তাকাতেও ভয় পাবে,(বলেই মুচকি হাসি দিয়ে সেখান থেকে চলে আসি)
আর এদিকে নতুন কলেজ নতুন মুখ, সব কিছু বেশ লাগতেছিলো,আস্তে আস্তে কিছু বন্ধু ও তৈরি করে নিয়েছি, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম,এমন সময় ফাতেমা আপু এসে আমাকে ডাক দিলো।
ফাতেমাঃ আমরিন শুনো একটু তোমার সাথে কথা ছিল কিছু
আমি: কি বেপার আজ এত্ত ভালো ব্যবহার কি জন্য করতেছে, কোন কিছু করবে না তো আবার
ফাতেমা : কি হলো উঠে আসো, কথা ছিল তোমার সাথে।
তার পর আর কি বন্ধুদের থেকে উঠে তার কাছে যাই,তার কাছে যেতেই সে আমার হাত ধরে টানতে টানতে কলেজ ক্যাম্পাসের পিছনে নিয়ে যায়।আর আমার বুকের ভিতর হার্টবিট ক্রমেইবেরে চলছে,কারণ এখানে এসে আস্তে আস্তে সব কিছু বুঝতে শিখি,সাথে ফাতেমা আপুর নামেও শুনি,সে নাকি এই এলাকার কমিশনার এর মেয়ে,তার দিকে কেও তাকানোর সাহস পায় না,আর সেখানে আমি তাকে রাস্তার মাঝে লিপ কিস করছি,ভাবতেই আমার শরীরের লোম গুলো শিউরে উঠতেছে
জানি না আজ আমার কপালে কি আছে,শুধু আল্লাহ আল্লাহ করতেছি, আর আম্মুর মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠতেছে,মনে মনে বলতেছি আম্মু তোমার ছেলের জীবনের দিনটা বোধয় আজকেই শেষ,হয়তো আর কোন দিন তোমার এই ছেলেকে আর দেখতে পারবে না,এসব ভাবতে ভাবতেই ফাতেমা, ওহহহ স্যরি ফাতেমা আপু আমাকে ডাকলো।
ফাতেমাঃ এই যে মিস্টার, কি হইছে আপনার হুমমম?ভয়ে পেন্ট ভিজাচ্ছেন কেন?
আমিঃ ককক,কই পেন্ট ভিজাচ্চি??আমি তো ঠিকই আছে।কি জন্য আমাকে এখানে আনলেন আপু
ফাতেমাঃ কি জন্য এনেছি তুমি জানো না???খুব জানতে ইচ্ছে করছে নাকি গো?
আমিঃ জ্বি, না না আপু জানার ইচ্ছে নাই,আপনি যা ভালো মনে করেন,কিন্তু আমার আম্মু বোধয় টেনশন করতেছে,আমায় বাসায় যেতে হবে।
মুন্নি : বাসায় তো যাবা সোনা,তোমায় একটু আদর যন্ত না করলে কি হয় বলো???
আমি: ককককি কি,আদর যত্..........(আর কিছু বলার আগেই আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি,কারণ ফাতেমা আপু যেরকম রাগি আর জিদি,তাতে আজ আমার খবর আছে,সেসব ভাবতে ভাবতেই জ্ঞান হারাই)
ফাতেমাঃ যা এটা কি করলি, তুই কেন ভয় দেখাতে গেলি, মারা তো যায় নি আবার?
মুন্নিঃ আরে না, দেখতেছিস না নিশ্বাস নিতেছে,ডং ধরছে হয়তো, পানি ছিটা মার দেখবি লাফ দিয়ে উঠে যাবে।
ফাতেমাঃ সত্যি তো??না কি হসপিটাল নিয়ে যাবো?
মুন্নি : কি বেপার তুই কি করতে নিয়া আসচ্ছিস?সেটা কর,ওর কি হলো সেটা কি আমাদের দেখার বিষয় নাকি?
ফাতেমাঃ ইসসস না।আমরিন ওই ওই শুনো, তোমার কি হইছে বলো আমায়,আমি তোমাকে কিছু করবো না,প্লিজ উঠো।
আচ্ছা বুঝলেন না তো হঠাৎ করে কেন ফাতেমা এরকম পাল্টি নিলো,তাহলে শুনুন,আমরিন যখন জ্ঞান হারায় ফাতেমার হাতের উপর পরে যায়,আর ফাতেমা তাকে জরিয়ে ধরে। আর ফাতেমা আমরিনের মায়াবী ভরা মুখটা দেখে তার মধ্যে হারিয়ে যায়,তার মায়াবী ভরা চোখের দিকে তাকিয়ে ফাতেমা থমকে যায়, হয়তো ফাতেমা তাকে ভালো বেসে ফেলেছে,
তার পর ফাতেমা আমাকে নিয়ে হসপিটাল যায়,হসপিটালে এডমিট করার পর ডাক্তার বলে এ তো শুধৃ জ্ঞান হারাইছে মিস: ফাতেমা,এত্ত অস্থির হচ্ছে ন কেন??কি হয় আপনার এসব।
ফাতেমা ডাক্তার এর কথা শুনে কিছুটা স্বস্থির নিশ্বাস ছারে,আর বলে তেমন কিছু বলে মাথা নিচু করে ফেলে,আর ডাক্তার তাদের পরিচিত হওয়ায় ডাক্তার ফাতেমার কথা বলা দেখে বুঝতে পারে তাদের মধ্যে কিছু চলছে।তাই সেও মুচকি হাসি দিয়ে বলে পেশেন্ট কে নিয়ে যেতো পারো মা মণি।
তাররপর ফাতেমা আমাকে নিয়ে হসপিটাল থেকে বের হয়ে আসে,আর আমার জ্ঞান ফিরার পর ফাতেমাকে বলি আপু আমি কোথায়??আর এটা কার গাড়ি?
ফাতেমা: তুমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলছিলে,তাই তোমাকে নিয়ে হসপিটাল এ আসচ্ছিলাম,
আমিঃ ওহহহ,কিন্তু.....
ফাতেমাঃ কি কিন্তু??? আর তোমাকে আমি কিছু করতাম না তুমি এত্ত ভীতু কেন??
আমিঃ আসলে আপু........
ফাতেমাঃ ঠাসসস,ঠাসসস, আর একবার আপু বললে তোর খবর আছে।
আমিঃ আপনি তো আমার সিনিয়র তো আপু বললবো না তো কি বলবো?
ফাতেমাঃ ফাতেমা বলে ডাকবা, শুধু ফাতেমা।
আমিঃ কিন্তু??? আপনাকে নাম ধরে ডাকলে মানুষ কি বলবে?পাবলিক বলবে ছোট্ট বাচ্চা বড় মেয়েদের নাম ধরে ডাকে,আমাকে তো সবাই বেয়াদব বলবে।
ফাতেমাঃ কেও কিচ্ছু বলবে না,আর যদি কেও কিছু বলে তো তাকে আমি দেখে নিব,তোমায় সেটা নিয়ে ভাবতে হবে না।
আমিঃ মানে আপু আপনার মাথা ঠিক আছে ত???
ফাতেমাঃ জ্বি জনাব আমার মাথা ঠিক আছে, তুমি ঠিক নাই আর তোমাকে আমি ঠিক করবো।
আমি : মানে কি ঠিক করবেন বুঝলাম না???
ফাতেমা এক রহস্যের হাসি হাসলো শুধু আর কিছু না বলে অন্য দিকে তাকিয়ে রইলো,তাকে বুঝতে পারতেছি না,সে কি বলতে চাচ্ছে বা কি ারতে চাচ্ছে।তাই আবার তাকে ডাক দিলাম ফাতেমা আপু বলে।
ফাতেমা: ঠাসসস,ঠাসসস,ঠাসস করে তিনটা থাপ্পড় মেরে দিলো,কিছু বুঝে উঠার আগেই,
কিছুই বুঝলাম না,আপু বলাতে সে এরকম রিয়েক্ট করতেছে কেন,তাহলে কি ফাতেমা আমাকে ভালোবাসে?
কিন্তু এটা কি করে সম্ভব? আমি তার থেকে গুনে গুনে চার বছরের ছোট্ট হবো,আর ক্লাসের দিক থেকেও আমি তার দুই ক্লাসের জুনিয়র, সে কি করে আমাকে ভালোবাসবে,আমি এসব ভাবতেছিলাম,তখনই ফাতেমার কথা বলাতে আমার ভাবনার অবসান হলো।
ফাতেমাঃ আমরিন আসলে জানি না তুমি কিভাবে নিবা, তবে আমি তোমাকে বলতে চাই কিছু
আমিঃ জ্বি বলুন, কেন এমন করতেছেন কি সমস্যা??
ফাতেমাঃ জানি না তোমায় প্রেম কিভাবে পরেছি,তোমাতে অসম্ভব রকম ভালাবাসি, আমি চেয়েছিলাম তোমায় একটা শাস্তি দিব,কিন্তু তুমি যখন জ্ঞা হারিয়ে আমার কোলে ডলে পরলে তখন তোমার মায়া ভরা মুখটা দেখে আমি সেখানে হারিয়ে যাই,আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি,জানি তুমি আমার থেকে জুনিয়র, কিন্তু ভালোবাসাতে তো কোন বয়স, বা ধর্ম বা পরিচয় মানে না,ভালোবাসা আপনা আপনি চলে আসে,তাই প্লিজ আমাকে ফিরিয়ে দিও না,
আমিঃ আপনি কি পাগল হইছেন?কোথায় আপনি আর কোথায় আমি?আপনার সাথে কোন ভাবেই তো আমার যায় না,আর আপনি এই এলাকার কমিশনারের মেয়ে, আর আমি মাত্র গ্রামের একজন কৃষক বাবার সন্তান
ফাতেমাঃ আমি তোমার পরিচয় বা তোমার বয়সে দেখে ভালোবাসিনি,আমি তোমাকে আমার মন থেকে তোমার মায়া ভরা মুখটা দেখে ভালোবাসেছি,আমি কিচ্ছু জানি না,তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিও না প্লিজ,
আমিঃ আপু আমার দ্বারা প্রেম ভালোবাসা করা সম্ভব না,এখানে আমার আব্বু আম্মু অনেক আশা নিয়ে পাঠিছে, পরা লেখার জন্য, আর এখানে যদি আমি রিলেশন করে আপনাকে সময় দিয়ে ঘুরে বেরাই, তাহলে আমার স্বপ্ন পূরণ হবে না,আর আমি যদি প্রতিষ্টিত হতে না পারি ত তখন আপনিও আমায় ছেরে যাবেন।তাই আপু আপনি আপনার রাস্তা দেখেন,আমি গেলাম
বলেই আমি গাড়ি থেকে নেমে পরতে যাই,কিন্তু গাড়ি থেকে আর নামতে পারলাম কই,পিছন থেকে কিছু একটা টানে গাড়ি ভিতরে শুইয়ে পরি,আর তখন ই ফাতেমা তার মিষ্টি ঠোঁটের স্পর্শ আমার ঠোঁট এঁকে দেয়,আর দিব্বি ৬ মিনিট পর ছেরে দেয়,আমার দম বন্ধ হওয়ার মতো অবস্থা।
আমি নিশ্বাস নিতে পারছি না,আমার যখন দম বন্ধ হই আসতেছিলো, আর পারতে ছিলাম না তখন ফাতেমাকে ধাকক্কা মেরে দুরে সরিয়ে দেই।আমার ধাক্কার ফলে ফাতেমা একটু ছিটকে দুরে সরে যায়,গাড়ি গ্লাসের সাথে তার মাথা বারি খায়,হয়তো অনেকটাই বেথা পেয়েছে,কারণ আমার থেকে দুরে সরে যাওয়ার পর থেকে সে মাথায় হাত দিয়ে আছে।
আমিঃ আ,আ,আপু স্যরি, আসলে আমি বুঝতে পারিনি এরকম ভাবে লাগবে।
ফাতেমাঃ বেপার না জানেমান,তুমিই তো,আর আসলে তোমার এত্ত কাছে আসলে আমি নিজের মাঝে থাকি না,তাই নিজেকে কন্টোল করতে পারিনি, তাই পাগলের মতো তোমার ঠোঁটের উপর হামলা করেছি,
আমি: হুমমম,আচ্ছা আমি তাহলে যাই,আমার বাসায় যেতে হবে,অনেক দেরি হই গেছে।
ফাতেমাঃ হুমম,সাবধানে যেও,আর শুনো।
আমিঃ হুমম বলেন??
ফাতেমাঃ তোমার ফোনটা একটু দিও তো
আমিঃ কিন্তু কেন, আমার নাম্বার নাই,নাম্বার দিয়ে কি করবেন??
ফাতেমা ঃ আবার একটা হবে নাকি?নাকি নাম্বার দিবা?
আমিঃ আবার কি হবে
ফাতেমাঃ যেটা এই মাত্র হলো,সেটা আবার দিব নাকি,??
বলেই ফাতেমা আমার শার্টের কলার টেনে ধরে কাছে নিতে যাচ্ছিলো,আর আমি তাকে ঝাকুনিয়ে সরিয়ে দিয়ে তার থেকে দুর৷ সরে যাই,আর নাম্বার দিয়ে বাসায় এসে পরি।
বাসায় এসে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমাতে যাচ্ছি, আর ফোনে রিংটোন বাজতে শুরু করলো।।
আমি: জ্বি আসসালামু আলাইকুম. কে বলছেন??
ফাতেমাঃ জানেমান আমি তোমার কলিজা বলছি
আমিঃ মানে কি বলতে চান?পরিচয় দেন না হলে ফোন রাখেন?
ফাতেমাঃ আরে পাগল আমি ফাতেমা বলছি,তুমি আমাকে চিনতে পারোনি
আমিঃ ওহহহ,হ্যাঁ আপু বলেন? কি জন্য ফোন দিছেন?
ফাতেমাঃ আমরিনের বাচ্চা
তুই যদি আর একবার বলিস না আপু, তো তোর খবর আছে,তোরে থাপ্পড়বয়ে দাঁত সব ফেলে দিব মনে রাখিস।
আমি : আচ্ছা আর বলবো না,কিন্তু কি জন্য এত্ত রাতে ফোন দিছেন বলেন?আমি ঘুমাবো,তারাতারি বলেন।
ফাতেমা : ভালোবাসি
আমি: কিন্তু আমি বাসি না।
ফাতেমা: তোমায় বাসতে হবেই, আমি যেটা একবার চাই সেটা যে কোন বিনিময়ে আদায় করি,আর তোমাকে তো আমায় লাগবেই।
আমিঃ আচ্ছা রাখি,আমি ঘুমাবো, (বলেই ফোনটা কেটে দিয়ে বন্ধ করে দিলাম এক ঘুম,এক ঘুমেই সকাল হয়ে গেলো,তার পর রেডি হয়ে কলেজে যাওয়ার উদ্দেশ্য বের হলাম,কলেজ থেকে বাসায় ফিরছি,
কিন্তু কথায় আছে না যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয়,ফাতেমা আমার সামনে রাগি লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে।)
গতকালকে ফোন বন্ধ করে ঘুমানোর পর সকালে ঘুম থেকে উঠে ফোন খুলে দেখি ফাতেমা ৯৯৯+ ফোন,কিন্তু আমি ফোন না ব্যাক করেই কলেজে চলে গেছি,কারন তার প্রতি কোন ফিলিংস আমার নেই।আর তাকে আমি বিশ্বাস করি না,
ফাতেমাঃ চল আমার সাথে আজ তোমার সাথে আমার অনেক হিসাব নিকাশ রয়েছে।
আমিঃ কি কথা বলবেন? আপনার সাথে আমার কোন কথাই নেই,আপনি আসতে পারেন।
ফাতেমা আমার হাত ধরে টানতে টানতে তার গাড়িতে উঠালো, আর গাড়ি উঠেই এত্ত সরপিডে গাড়ি চালাচ্ছে মনে হচ্ছে কোন ঝুর্নিঘর হচ্ছে।
আমিঃ আআপ....স্যরি ফাতেমা এভাবে জোর গাড়ি চাচ্ছেন কেন?যখন দখন তো এক্সিডেন হতে পারি আমরা,আস্তে চালান।
আমার কথার কোন উত্তর না দিয়ে সে তার এক মনে গাড়ি চালাচ্ছে।এক সময় হঠাৎ করে গাড়ি থেমে যায়,বাহিরের দিকে তাকিয়ে দেখি কাজি অফিস,আর পাশে অনেক মানুষ দারানো,তার মধ্যে কয়েকজনেক আমি চিনি,তাদের মধ্যে আমার বন্ধুরাও আছে দেখে আমি আরও অবাক হচ্ছি।।
গাড়ি থামার পর আমি আমি গাড়ির মধ্যে বসে ছিলাম,হঠাৎ করে ফাতেমা গাড়ির দরজা খুলে আমাকে নামতে বলে,গাড়ি থেকে নামার পর আমার হাত ধরে কাজি অফিসের ভিতরে নিয়ে যায়,কাজী অফিসেন ভিতরে ডুকে আমি অবাক না হয়ে পারি না,কারণ এখানে আমার আব্বু আম্মু, ও সাথে আরও দুজন বসে আছে যাদের আমি চিনি না।কিন্তু আমার আব্বু আম্মু এখানে কেন সেটা আমি বুঝতে পারছি না,আর এরা কি করে আমার আব্বু আম্মুকে এখানে এনেছে সেটা ভাবতেছি,সব ভাবনার ছেদ ঘটালো, ফাতেমার কথাতে।
ফাতেমাঃ আমরিন তুমি হয়তো ভাবছো তোমার আব্বু আম্মু এখানে কেন?আর কি বা হতে যাচ্ছে তাই না?
তাহলে শুনো আমি ফাতেমা আক্তার, আর আমার বাবা কমিশনার, তাই আমার দ্বারা কোন কাজই নেই যেটা করা সম্ভব না,অবশ্য এই কাজে আমাকে তোমার বন্ধুরা সাহায্য করছে।
আমিঃ কিন্তু এক রকতের মধ্যে কিভাবে আব্বু আম্মুকে ঢাকাতে আনছেন?আমার মাথায় কিচ্ছু ডুকছে না।
ফাতেমাঃ সব বুঝাবো বাসর ঘরে চলো শুভ কাজটা সেরে ফেলি আগে।
আমিঃ না,আমি বিয়ে করবো না,আমি আপনাকে বিয়ে করলে আপনি আমায় মারবেন
ফাতেমাঃ হিহিহিহহিহিহিহিহিহ,এত্ত ভয় পাও আমাতে আগে ত জানতাম না?
আমিঃ
ফাতেমাঃ হইছে আর ডং করতে হবে না,চলো বাবু বিয়ে টা করে নেই,তোমাকে খুব করে কাছে পেতে ইচ্ছে করতেছে।
তার পর আর কি সব কিছুর পর আমার আর ফাতেমার বিয়েটা সত্যি সত্যি হয়ে গেলো,বিয়ের কাজ সম্পুর্ন করে আমরা সবাই ফাতেমার বাড়িতে আসলাম,ফাতেমাদের বাড়িটা অনেক বড়,মনে হচ্ছে রাজ প্রাসাদ,অনেক সুন্দর করে সাজানো।(বি:দ্র: যেহেতু আমি গ্রামে থাকি আর আমার আব্বু একজন কৃষক সেহেতু আমি কখনও এত্ত বড় বাড়ি কখনও দেখিনি
ফাতেমাঃ কি জানেমান?কি দেখো বাড়ি তো তোমারই এটা,বাসা দেখে কি হবে আজ রাতে শুধু তুমি আমাকে দেখবে আর আমি তোমাকে।
তার পর আর কি সব কিছু বাদে আমি আমার জীবনে প্রথম বাসর ঘরে ডুকে গেলাম,তবে হ্যাঁ বাসর ঘরে ডুকার আগে বন্ধুরা বাঁশ দিয়ে দিছে,আমি জব করি না তাও আমার থেকে অনেক গুলো টাকা নিয়ে নিলো,এটা নাকি তাদের ট্রিট তারা সুন্দর করে বাসর ঘর সাজিয়ে দিছে তার জন্য তাদের কাছে চাঁদা দিতে হলো।
ফ্লাসব্যাক.................
আচ্ছা এবার আসি আসল কাহিনি তে, বুঝলেন না তো, যে মেয়েটা আমরিনের উপর রেগে ছিল,যাকে দেখতেই পারতো না,তাকে কিভাবে ভালোবােসে বিয়ে করলো,সেটার রহস্য কি আজও খুঁজে পেয়েছেন??
আসলে প্রথম দিন যখন ফাতেমা আমরিনের গালে থাপ্পড় দেয়,আমরিন ফাতেমার ঠোঁটের স্পর্শ নিয়ে তাকে ছেরে দেওয়ার পর ফাতেমা তো তার উপর রেগে ছিল,তাহলে কেন সেই আমরিনকে বিয়ের করার জন্য এত্ত কিছু?
সেদিন ফাতেমার সাথে কাহিনি করে আসার পর একদিন ফাতেমাকে কয়েকটা ছেলে রাতের আধারে ঘিরে ধরে, আর ফাতেমার ইজ্জত নষ্ট করতে চায়,আর আমরিন রাস্তার পাশে দিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তার নিচ থেকে কয়েকটা ছেলে আর একটা মেয়ের চিৎকার এর শব্দ শুনে বুঝতে পারে সেখানে কিছু সমস্যা হচ্ছে, তাই আমরিন সেখানে যেয়ে দেখে ৫ টা ছেলে একটা মেযেকে ঘিরে ধরে তার জামা খোলার চেষ্টা করছে,কিন্তু মেয়েটি হাতাহাতি করে কোন ভাবে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করতেছে,কিন্তু অনেক যায়গাতে জামার অংশ ছিঁড়ে গেছে,আর একটু হলেই মেয়েটিকে ছেলে গুলো ছিঁড়ে খাবে,সেসময় আমরিন তাদের সামনে যেয়ে দারায়,
আর আমরিন সেখানে যেয়ে দেখে ফাতেমা,ফাতেমাকে দেখে সেখান থেকে চলে আসতে যাবে,কিন্তু কোন কারণে মন বাধা দিলো,তাই তাদের থেকে তাকে বাঁচিয়ে নিয়ে সসম্মানে তার বাড়ি পৌছে দেয়।আর সেখান থেকে আমরিনের উপর যত রাগ অভিমান ছিল সব ভেঙ্গে যেয়ে আমরিনের উপর ফাতেমার ভালোবাসা সৃষ্টি হতে শুরু হতে থাকে আস্তে আস্তে।
বর্তমান.........
বাসর ঘরে ডুকে দরজা আটকানোর পর ফাতেমা আমার পা ছুঁয়ে সালাম করতে যাবে,তাকে ধরে নিয়ে বুকের মাঝে জরিয়ে ধরি,হাজার হলেও সে এখন আমার বউ।এখন তাকে মেনে না নেওয়ার কিচ্ছু নেই,তাই ফাতেমাকে বলতে শুরু করি।
আমিঃ তোমার স্থান পায়ে নয়,তোমার স্থান আমার বুকের বা পাশে,তুমি আমার জীবনের পথ চলার পথ সাথী, তোমাকে আমি অসম্ভব রকম ভালোবাসতাম, তোমায় যেদিন প্রথম দেখি, সেদিনই তোমায় ভালো বেসে ফেলেছি, কিন্তু ভয়ে বলতে পারিনি,
ফাতেমা : কিহহহ সত্যি
আমিঃ হুমমম সত্যি অনেক ভালোবাসি তোমায় পাগলি।
বলেই জরিয়ে ধরে ফাতেমাকে বিছানায় নিয়ে যাই।
বাকি টা ইতিহাস আপনারা এখন আসতে পারেন
ধন্যবাদ এত্তক্ষণ করে গল্পটি পরার জন্য।
আর হ্যাঁ অনেক দিন যাবৎ এক পার্টে গল্প লিখি নি,কিছুটা অসুস্থ থাকার জন্য অনেক দিন বাদ দিয়ে ছিলাম,তার পর ওয়েবাসাইটে লেখা লেখি করতাম পার্ট পার্ট গল্প লিখতাম,কিন্তু অনেক দিন পর ইউটিউব এর জন্য লিখা গল্প তাই ভালো করে সাজাতে পারিনি,ইনশাআল্লাহ অনেক দিন লিখছি ততটাও ভালো হয়নি, তবে ইনশাআল্লাহ প্রথম গল্পটা শুরু করার পর নিজের মাঝে আগের লেখকটাকে খুঁজে পেয়েছি, ইনশাআল্লাহ কালকে থেকে আরও ভালো গল্প উপহার দিব আপনাদের
ধন্যবাদ সবাইকে
সমাপ্ত