Linksstories

linksstories` logo
তোমার আমার প্রেম - পার্ট 10 | Bangla Love Story

তোমার আমার প্রেম – পার্ট 10 | Bangla Love Story

” কেউ দেখলে কী হবে,হ্যাঁ? আপনি আপনার হবু বউয়ের সাথে দেখা করতে এসেছেন। এখানে কার কী, হ্যাঁ? কেউ কোন সাহসে কিছু বলবে?
” আচ্ছা তাহলে চলো হাটি। (হেসে)
” চলেন।
সিজান, আইরিন দুজনেই সরু রাস্তা দিয়ে হাটতে থাকে, আর নিজেদের মনের কথা গুলো একে অন্যের সাথে শেয়ার করতে থাকে।
অনেকটা পথ আসার পর দুজনে এবার রাস্তার ধারে ঘাসের উপর এসে বসে।
” এইই তোমাদের পরিবারে ঘর জামাউ থাকার ব্যবস্থা আছে?
” কেনো কেনো?
” না মানে তাহলে ঘর জামাই থেকে যেতাম আরকি।
” মানে কী? আপনি ঘর জামাই হয়ে থাকতে চান কেনো? মতলব টা কী শুনি?
” মতলব কিছু না। গ্রাম টা সুন্দর। যান্ত্রিক শহর ছেড়ে গ্রামে এসে থাকতে ইচ্ছে হয়।
” উহুম তাহলে এক কাজ করেন।
” কী.?
” ঢাকার বাড়িটা বিক্রি করে, এই গ্রামে জমি কিনে ঘর বানান। তাহলেই হলো। ঘর জামাই থাকলে খোঁটা শুনতে হবে। আমার জামাইকে কেউ খোঁটা দিবে, তা আমি সহ্য করতে পারব না, হু।
” ওমা তাই…?
” হ্যাঁ তাই।
” আচ্ছা তাহলে এই কথাই রইল।
” কোন কথা?
” বাড়ি বিক্রি করে এখানে এসে নতুন বাড়ি বানাবো।
” সিরিয়াসলি? আমি তো এমনি মনা করে বলেছি।
” দেখা যাক। (হেসে)
” আচ্ছা এবার তাহলে উঠেন। অনেক্ষন তো হলো।
” তাড়িয়ে দিচ্ছো?
” না না, আমার তো সবসময় আপনার সাথে থাকতে ইচ্ছে করে। তাড়িয়ে দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।
” তাহলে?
” তাহলে কিছুই না। আপনি তাহলে আজকে সারাদিন আমার সাথে থাকবেন। কোথাও যেতে পারবেন না আপনি।আমি নাকি তাড়িয়ে দিচ্ছি তাকে। এবার দেখবো কেউ তাড়িয়ে দিচ্ছে নাকি কেউ নিজ থেকেই চলে যাচ্ছে।
আইরিনের কথা শুনে সিজান হেসে উঠে।
” পাগলী একটা। চলো।
” কোথায়?
” আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে, আমি বাসায় যাবো না?
” না কোথাও যেতে হবে না, আমার সাথেই থাকেন।
” হাহা, চলো।
সিজান, আইরিনের হাত ধরে টেনে বসা থেকে উঠায়। দুজনে সরু রাস্তা দিয়ে হাতে হাত রেখে হেটে যাচ্ছে।
!!
!!।
আজকে সিজান-আইরিন এর গায়ে হলুদ। চৌধুরী বাড়িতে খুশির বন্যা বইছে। তাদের একমাত্র ছেলে সিজান চৌধুরীর বিয়ে হতে যাচ্ছে। মহা ধুমধামে বিয়ের আয়োজন করা হচ্ছে।
এইদিকে সিজান কিছুক্ষণ পর পর আইরিনকে ফোন দিয়ে বিরক্ত করছে। আইরিন এর কাজিনেরা তা দেখে আইরিনের সাথে মজা নিচ্ছে।
” দেখ দেখ জামাইয়ের তর সইছে না। এই কিছুক্ষনের মধ্যে ফোন দিয়ে আমাদের বোন টাকে বিরক্ত করে ছাড়ছে। জামাই একটা বউ পাগল হবে মনে হচ্ছে।
” শুধু সে পাগল না, কালকে বাসর রাতে বউকেও পাগল করে ছাড়বে।
” ধ্যাত, তোরা কি যে বলিস না?
” উমা উনি লজ্জাও পাচ্ছে। লজ্জায় লাল নীল রংধনু হয়ে যাচ্ছে।
এরই ভিতরে সিজানের আবার কল আসে। সবাই তখন সমস্বরে হেসে উঠে। দুজনকে কিছুক্ষণ কথা বলতে দেওয়ার জন্য সবাই বাহির হয়ে যায়। বের হওয়ার আগে আইরিনকে বলে যায়।
” তাড়াতাড়ি কথা শেষ করিস। কথা বলতে বলতে সকাল করে দিস না। গায়ে হলুদের স্টেজে বসতে হবে তোকে।
সবাই হেসে উঠে চলে যায়।
এইদিকে আইরিন কল রিসিভ করে রুক্ষ কন্ঠে বলে উঠে,
” কী সমস্যা আপনার, হ্যাঁ? এতোবার কল দেওয়া লাগে? আমার কাজিনরা কীভাবে আমাকে পচাচ্ছিল। আপনার জন্য আমাকে নিয়ে হাসি মজা করছিল।
” কাজিনরাই তো হাসি মজা করবে। ওরা তো আছেই এগুলা করার জন্য। আমার কী দোষ? আমার তোমার সাথে, তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছিল। কিন্তু তুমি তো পিক পাঠাচ্ছিলেই না।
” রেডি হতে দিলেই তো পাঠাবো। রেডি হওয়ার সুযোগিই তো দিচ্ছেন না।
” রেডি হতে এতো সময় লাগবে কেনো?
” মেয়েদের একটু বেশি সময় লাগে।জানেন না?
” না জানতে চাই না। এখন পিক পাঠাও।
” রেডি হই নাই তো এখনো।
” এখন যেভাবে আছো, ওইরকম পাঠাও। রেডি হইলে তখন আবার পাঠাবা।
” আচ্ছা আচ্ছা। পাঠাচ্ছি।
আইরিন ফোনের লাইন বিচ্ছিন্ন করে কয়েকটা সেলফি তুলে সিজানের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দেয়। সেন্ড হওয়ার সাথে সাথেই সিন। যেনো সিজান চাতক পাখির জন্য অপেক্ষা করে বসে ছিল।
” মাসাল্লাহ বউটাকে ভারী সুন্দর লাগছে। লাভ ইউ বউ।
” হইছে এবার যাই নিজের কাজ করেন। আর আমাকেও আমার কাজ করতে দেন।
” যাচ্ছি যাচ্ছি।
সিজান ফোন রেখে দিয়ে গায়ে হলুদের স্টেজে গিয়ে বসে। প্রথমে তার বাবা মাহবুব চৌধুরী ও মা জাহানারা চৌধুরী এসে তার গায়ে হলুদ দিয়ে যায়। তারপর এক এক করে আত্নীয় স্বজন বন্ধুবান্ধব সবাই এসে হলুদ দিয়ে যায়।
আর এইদিকে আইরিনের কাজিনেরা এসে আইরিনকে সাজিয়ে দিতে থাকে। হলুদ শাড়ি, মাথায় টুকলি, হলুদ চুড়ি পড়িয়ে সাজিয়ে দেয়। সাজানো শেষ হলে আইরিনকে নিয়ে গিয়ে স্টেজে বসায়। অবশ্য আইরিন স্টেজে বসার আগে, তার হবু জামাইয়ের ফোনে পিক সেন্ড করতে ভুলেনি।
আইরিনকে স্টেজে বসানো হলো, আইরিনের মা-বাবা এসে আইরিনের হাতে, মুখে হলুদ মাখিয়ে দিয়ে যায়। মেয়েকে তারা আর্শিবাদও করে দিয়ে যায়। মা-বাবার হলুদ দেওয়া শেষ হলে তার ভাই-ভাবী এসে তাকে হলুদ মেখে দেয়।
” স্বামী নিয়ে সুখে শান্তিতে ঘর করো ননদিনী।

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top