” তারপর কি? ফাজলামি করবি না একদম আমার সাথে। তোর বন্ধু আয়ান বিয়ে করে নিয়েছে।তুই বিয়ে করছিস না কেন? আমার কি বউয়ের মুখ দেখতে ইচ্ছে করে না? নাতি নাতনিদের মুখ দেখতে ইচ্ছে করে না?
” দেখবে দেখবে, সময় হলে সব দেখবে।
” তোর সময়ের খেতায় পুরি। তোকে এক সপ্তাহ সময় দিলাম। এর মধ্যে তোর কেউ পছন্দ থাকলে আমাকে বলবি,নাহলে আমার পছন্দে বিয়ের পিরিতে বসবি।
!!
সন্ধ্যার পরে ইমরান বিছানায় বসে বই পড়ছিল। এমনসময় ফোনের রিংটোন বেজে উঠে। ফোন হাতে নিয়া দেখে ইরিনের নাম। ইমরান হেসে দেয়। তখন বলেছিল আড়ি, ফোন দিবে না।
ইমরান ভাব নিয়ে ফোন রিসিভ করে,
” হ্যালো। {গম্ভীর কন্ঠে)
” কী করেন.?
” কেউ একজন বলেছে আমার সাথে নাকি আড়ি। আমাকে আর ফোন দিবে না।
” কখন বলছি, ভুলে গেছি আমি।
” আমি মনে করিয়ে দিবো..?
” দেখেন মেজাজ গরম করবেন না। নাহলে কিন্তু খবর আছে আপনার.।
” আমাকে ভয় দেখাচ্ছো.? পিচ্চি মেয়ে আমাকে ভয় দেখাচ্ছে।
” ওই কে পিচ্ছি?
” তুমি পিচ্ছি। আমাকে কোন এঙ্গেল থেকে আপনার পিচ্ছি মনে হয়,হু?
” তোমার তো বয়স এখনো আঠারো হয়নি। তুমি পিচ্ছি নও তো কী?
” কাল পরশুর দিকে আঠারো হয়ে যাবে। দুই একদিনের জন্য আমি পিচ্ছি হয়ে যায়নি, ওকে.?
” শুনো কাল পরশু আগে আসুক, তারপর দেখা যাবে তুমি হয়েছো কিনা.?
” দেখুন আপনি কিন্তু আমাকে রাগিয়ে দিচ্ছেন.?
” আমি কীভাবে রাগিয়ে দিবো? তুমি কোথায়, আর আমি কোথায়?
” আপনাকে না দুইটা ঘুষি দিতে পারলে আমার শান্তি লাগতো। মন চায় এখনি এসে দুইটা ঘুষি দিয়ে যায় আপনাকে।
” তো আসো না। মানা করছে কে.?
” আসতে পারলে তো আসতাম। এসে দফাদফ মাইর দিতাম।
” হাহহাহাহ।
” হাসেন কেনো? হাসার কী বলছি?
” তুমি আর হাসাইও না আইরিন। তোমার কথা শুনে আমার অনেক হাসি পায়।
” আমি কি জোকার,হ্যাঁ? আপনার সাথে আর কথাই বলব না। সবসময় আমাকে রাগায়। ফোন তো নিজে দিবেই না। আমি দিলে আমাকে রাগিয়ে ছাড়বে। শয়তান পোলা একটা। রাখি হু।
” আচ্ছা রাখো।
আইরিন ফোন রেখে দেয়। সিজান হাসি দেয়। সিজান একটা জিনিস খেয়াল করেছে, আইরিনের সাথে কথা বলতে ওর ভালোই লাগে। বিশেষ করে আইরিন যখন রাগে, রাগাতে ওকে আরো ভালো লাগে তার কাছে। সিজান কি সত্যি সত্যি আইরিনের প্রেমে পড়ে যাচ্ছে.?
!!
সিজান, জাহানারা চৌধুরীর সাথে বসে ব্রেকফাস্ট করছে। এমন সময় জাহানারা চৌধুরী বলেন,
” সিজান দুইদিন পার হয়ে গেছে অলরেডি। তোর হাতে আর মাত্র পাঁচ দিন সময় আছে।
” কীসের সময় আম্মা.?
” ওমা ভুলে গেলি? তোর বিয়ের জন্য মেয়ে পছন্দ করার সময়।
” আম্মা তুমি আবার আমার বিয়ে নিয়ে পড়েছো। আমার কি খুব বেশি বয়স হয়ে গেছে, বলো তো?
আমি তো এখনো ছোট, আমার তো বিয়ের বয়সই হয়নি।
” একদম আমার সাথে ঢঙ করতে আসবি না। উনি নাকি ছোট? কয়দিন পর তো তোর জন্য মেয়েই খুঁজে পাওয়া যাবে না।
” আমি আর কিছু বলব না। তোমার যা ইচ্ছা করো।
” বলতে হবে না। বিয়ার জন্য প্রিপারেশন নেও। এবার তোমায় বিয়ে করিয়ে ছাড়বো।
“!!
আইরিন কলেজে যাওয়ার জন্য রাস্তা দিয়ে হাটতে থাকে। কলেজ কাছেই আসে। হেটে হেটেই সে প্রতিদিন কলেজে যায়। হঠাৎ করে কিছুটা দূরে কেউ একজন কে দেখে সে থমকে দাঁড়ায়। গাছের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আইরিন ছিনার জন্য আরো কাছে এগিয়ে যায়। হ্যাঁ সিজান দাঁড়িয়ে আছে। আইরিন সব কিছু ভুলে দৌড়ে সিজানের কাছে যায়। সে সিজানকে দেখে অনেক খুশি হয়।
” আপনি এখানে, কেনো?
” তো কোথায় থাকবো?
” আপনার বাসা শহরে, আপনি অবশ্যই শহরে থাকবেন।
” এখানে আমার একটা কাজে এসেছি।
” গাছের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে, কী কাজ করছিলেন শুনি?
” কাজ শেষ হয়নি এখনো। একটু বিশ্রাম নেওয়ার জন্য দাঁড়িয়েছি।
” তা কী কাজে এসেছেন, শুনি?
” তোমাকে কেনো বলবো, পিচ্ছি মেয়ে?
” আচ্ছা বলতে হবে না। চলেন, আমাদের বাসায় চলেন।
” আরে নাহ। তুমি কলেজে যাচ্ছিলে মনে হয়। কলেজে যাও।
” আপনি কী করবেন.?
” আমি চলে যাবো।
” আপনার কাজ.?
” কাজ তো হয়ে গেছে।
” মানে,কখন.?
সিজান গাছের কাছ থেকে সরে এসে আইরিনের দিকে এগিয়ে যায়। আইরিন ভয়ে কিছুটা পিছিয়ে যায়। সিজান, আইরিনের কাছে গিয়ে কানে কানে ফিসফিস করে বলে,
” তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছিল। তাই দেখতে এসেছি।
সিজানের বলা কথা শুনে ফারিন অবাক হয়ে যায়। ফারিন অবাক হয়ে সিজানের দিকে ফিরে তাকায়।
” কী বললেন.?
” শুনতে পাও নাই.? তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছিল। তাই দেখতে এসেছি।
” সত্যি আপনি আমার জন্য এসেছেন.?
” হ্যাঁ তোমার জন্য এসেছি।
” তাহলে আমি কী ধরে নিবো.?