সিজানের বলা কথা শুনে ফারিন অবাক হয়ে যায়। ফারিন অবাক হয়ে সিজানের দিকে ফিরে তাকায়।
” কী বললেন.?
” শুনতে পাও নাই.? তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছিল। তাই দেখতে এসেছি।
” সত্যি আপনি আমার জন্য এসেছেন.?
” হ্যাঁ তোমার জন্য এসেছি।
” তাহলে আমি কী ধরে নিবো.?
” তোমার যা ইচ্ছে, তুমি ধরতে পারো।
” প্রেমে পড়েছেন নাকি ভালোবেসে ফেলেছেন.?
” যদি বলি দুইটাই.?
” সত্যি.?
” বিশ্বাস হয় না.?
” উহু না।।
” তাহলে কীভাবে বিশ্বাস করাবো? কী করলে বা বললে বিশ্বাস হবে.?
” আপনি করবেন.?
” হুম করবো।
” বেশি কিছু বলতে হবে না। আমাকে ভালোবাসেন, নিজের মুখে বললেই আমি বিশ্বাস করবো।
” এইটুকুই?
” হুম এইটুকুই বলেন।
” আইরিন তুমি বাসা থেকে চলে আসার পর আমি তোমাকে অনেক মিস করেছি। সবসময় তোমার কথা মনে পড়তো। তোমার মুখশ্রী আমার সামনে ভেসে উঠতো। আমি তোমাকে ফিল করতে শুরু করি। আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি আইরিন।
আমি তোমাকে ভালোবাসি।
আইরিন সিজানের মুখ থেকে কথা গুলো শুনে দেরি করেনি সিজানের বুকে ঝাপিয়ে পড়ে। সিজান কিছুটা পিছিয়ে পড়ে৷ সে ভাবেনি আইরিন এমন কিছু করবে। গ্রামের মেয়েরাও অনেক আপডেট হয়ে গেছে দেখি।
” আইরিন এইটা পাব্লিক প্লেস। কেউ এসে পড়বে। কী করছো কী তুমি?
আইরিন সিজানের বুক থেকে মাথা তুলে।
” আপনি এতো ভীতু কেন? ছেলে হয়েও ভয় পানি। যেখানে আমি মেয়ে হয়েও ভয় পাচ্ছি না।
” তোমার জন্যই ভয় পাচ্ছি। কেউ দেখলে আমার কোনো সমস্যা হবে না। এটা তোমার এলাকা, তোমারি সমস্যা হবে না।
” কি আর সমস্যা হবে? সবাই ধরে বেধে আপনার সাথে আমার বিয়ে দিয়ে দিবে।
” ওরে ফাজিল মেয়ে।
” হি হি হিহি।
আইরিন হেসে দেয়।
” তোমার কিন্তু কলেজের দেরি হয়ে যাচ্ছে?
” হোক, আজকে আর কলেজে যাবো না। আজকে আমি অনেক খুশি। আজকের দিনটা সেলিব্রেট করবো। চলেন আমরা কোথাও ঘুরি।
” কোথায় ঘুরবা?
” আশেপাশে যেকোনো জায়গায়।
” ওকে চলো।
সিজান হাটা শুর করে মেইন রোডের দিকে। আইরিন কিছুটা দৌড়ে এসে সিজানের বরাবর এসে হাটতে থাকে।
” আপনার হাত ধরে হাটতে চাই।
সিজান হেসে নিজ থেকেই আইরিন হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে হাটতে থাকে। আইরিন অনেক খুশি হয়।
দুজনে পিচ ঢালার রাস্তায় আসে। সিজানের গাড়ি রাস্তার একপাশে রাখা। সিজান গাড়ির দরজা খুলে দিলে আইরিন গিয়ে বসে পড়ে। সিজান অন্য পাশে গিয়ে ড্রাইভ করতে বসে পড়ে।
গাড়ি চলতে শুরু করে। সিজান, ফারিনের পাশের জানালা খুলে দেয়। আইরিন হেসে বাইরের প্রকৃতির সৌন্দর্যের দেখায় মনোযোগ দেয়।
অনেকক্ষণ গাড়ি চালানোর পর সিজান গাড়ি থামায়।
” নামো।
সিজানের কথা শুনে আইরিন তার দিকে তাকায়।
” এখানে.?
” হুম এখানে।
” ওকে
দুজনে গাড়ি থেকে নামে। আইরিন খেয়াল করে পিচ ঢালার রাস্তা থেকে কিছুটা দূরে একটা নদী বয়ে গেছে। আইরিন পিচ ঢালা রাস্তা থেকে হেটে নদীর কিনারায় গিয়ে দাঁড়ায়। পিছন পিছন সিজানও এসে দাঁড়ায়।
” এখানে কখনো দাঁড়ানো হয় নি। এই জায়গাটার নাম কী.?
” আমি তো এই এলাকার না। তাই আমিও জানি না।
জায়গাটা সুন্দর মনে হয়েছে। তাই এখানে গাড়ি থামালাম।
” হুম তবে সুন্দর আছে জায়গাটা। খোলামেলা, বাতাসে পরিপূর্ণ। ফিলিং গুড।
” মুখে তো বলছো এই কথা। আবার মনে মনে কিপটা বলছো না তো.?
আইরিন ঘুরে সিজানের দিকে তাকায়। ভ্রু উঁচিয়ে জিজ্ঞেস করে,
” কিপটে বলবো কেনো?
” এই যে ছেলেটা কোনো রেস্টুরেন্টে না নিয়ে গিয়ে। একটা নদীর পাশে নিয়ে এসেছে। কিপটেই তো।
” আরে দূর কীযে বলেন না.? আমি মোটেও এমন কিছু ভাবিনি। আমার বরং ভালোই লাগছে জায়গাটা।
” ভালো লাগলেই ভালো। চলো ওই খানটায় বসি.?
” হুম চলেন।
সিজান,আইরিন দুজনেই ঘাসের উপর বসে পড়ে।
দুজনে কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকে। আইরিন মুখ খুলে,
” আচ্ছা আপনার প্রথম গার্লফ্রেন্ড এর নাম কী?
সিজান প্রশ্ন শুনে ভ্রু কুচকায়।
” প্রথম গার্লফ্রেন্ড আসবে কোথায় থেকে.?
” মানে? আপনি আজ পর্যন্ত একটাও প্রেম করেন নি?
” তুমিই প্রথম। দেখা যাক এরপর কয়টা করা যায়।
” মানে কী? আইরিন কথাটা শুনে সিজানকে মারতে শুরু করে।
‘” আরে এই মেয়ে মারছো কেনো?
“একদম মেরে ফেলবো আপনাকে । আমিই প্রথম, আমিই যেনো শেষ হই.?
” আচ্ছা আচ্ছা। (হেসে)
” আপনার কাধে মাথা রাখবো?
” না।
” আমি রাখবো। আপনি বললে হবে নাকি?
আইরিন, সিজানের কাধে মাথা রাখে। সিজান হেসে দেয়।