দুসংবাদ টা হচ্ছে একদিন যেতে না যেতেই আমাদের প্রেমের ইতি ঘটছে।
” মানে কী বলছেন এইসব? প্রেমের ইতি ঘটছে মানে? (ভয় পেয়ে)
” হুম আমাদের প্রেমের ইতি ঘটবে দুই একদিনের মধ্যে। এবার সুসংবাদ টা শুনো।
” সুসংবাদ পরে শুনবো। আগে বলেন প্রেমের ইতি ঘটছে মানে কী?
” মানে আম্মা আমার বিয়ে ঠিক করেছে। তিনি অতি দ্রুত আমার বিয়ে দিয়ে, ঘরে উনার ছেলের বউ আনতে চায়।
” মানে কী? আপনি রাজি হয়ে গেলেন.?
” হুম রাজি হবো না.? অনেক বছর থেকে জোর করেছিল। আর কতো না করি, বলো?
” রাজি হয়েছেন, ভালো করেছেন? কিন্তু আপনি আমার কথা উনাকে কেনো বলেন নি.?
” আচ্ছা তুমি সুসংবাদ টা তো শুনবে.?
” আচ্ছা বলেন, সুসংবাদ। কী সুসংবাদ আছে আমার জন্য.?
” আমার বিয়ে তোমার সাথেই হচ্ছে।
” কীইই……সত্তিইই..?
আইরিন কিছুক্ষণের জন্য স্তব্ধ হয়ে যায়। কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলে সে। মানুষ যখন অতি বেশি খুশি হয়, এমন অনুভূতি প্রকাশ পায় তার।
” হুম সত্যি। আমি তোমার কথা বললাম যখন, আম্মারও দেখি আগে থেকেই তোমাকে পছন্দ।
” আমার তো বিশ্বাসি হচ্ছে না। কি যে খুশি লাগছে আমার। আমার মন চাচ্ছে এক্ষুনি আপনার কাছে গিয়ে আপনাকে জড়িয়ে ধরি বলে ভালোবাসি আপনাকে। অনেক ভালোবাসি।
” হাহা পাগলী একটা।
” আমি আসলেই পাগলী? আপনার জন্য।
” এখন সুন্দর করে ঘুম দেও। কালকে আসছি তোমাদের বাড়িতে। তোমাকে আমাদের বাড়ির একজন পার্মানেন্ট সদস্য করতে।
” আমি কালকে কী পড়তাম,বলেন? আপনার পছন্দের সাজে সাজবো।
” উঁহু খুব বেশি সাজতে হবে না। তুমি এমনিতেও অনেক সুন্দর। তবে শাড়ি পড়িও, শাড়িতে তোমাকে আরো বেশি সুন্দর ফুটফুটে লাগে।
” আচ্ছা আমি কালকে শাড়িই পড়বো।
” হুম এখন ঘুমাও।
” আচ্ছা। আল্লাহ হাফেজ।
ভালোবাসি।
” আল্লাহ হাফেজ। আমিও ভালোবাসি।
!!
!!
সকালবেলা আইরিন ঘুম থেকে উঠে গোছল করে নেয়। সে শাড়ি পড়তে পারে না। শাড়ি পড়ার জন্য আম্মার কাছে যায় সে।
” আম্মা আমাকে শাড়িটা পড়িয়ে দাও তো।
মেয়ের কথা শুনে নাফিসা বেগম প্রথমে ভ্রু কুচকায়। মেয়েটা হঠাৎ কোনো কারণ ছাড়া শাড়ি পড়তে চাইছে কেনো? উনি বুঝতে পারছে না।
” কী হলো এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?
” তুই হঠাৎ শাড়ি পড়বি কেনো? শাড়ি পড়ার তো কোনো কারণ দেখছি না।
” আমার ইচ্ছে হলো, আমি শাড়ি পড়বো। তুমি পড়িয়ে দিবে কীনা,এটা বলো?
” আচ্ছা পড়িয়ে দিচ্ছি। এইদিকে আয়।
নাফিসা বেগম, সুন্দর করে আইরিনকে শাড়ি পড়িয়ে দেয়। শাড়ি পড়া শেষ হলে, আইরিন তার আম্মাকে ধন্যবাদ দিয়ে হেসে চলে যায়।
আইরিন নিজের রুমে এসে ঝটপট নিজের কয়েকটা সেলফি তুলে নেয়। তারপর সিজানের হোয়াটসঅ্যাপে সেন্ড করে দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যে রিপ্লাই আসে।
” বাহ নীল পরী! আমি তো ফটোতে দেখেই পাগল হয়ে যাচ্ছি। সামনে সামনে দেখলে তো আমি শেষ হয়ে যাবো।
আইরিন লজ্জা পেয়েছে এমন ইমুজি সেন্ড করে। তা দেখে সিজান হাসির ইমুজি সেন্ড করে।
” কখন আসবেন.?
” আমি অলরেডি বের হয়ে গেছি। একটু অপেক্ষা করো। চলে আসছি।
” হু অপেক্ষা করেই আছি।
“!!
আয়ানদের বাড়ির সামনে এসে রিক্সা থামে। সিজান, তার আম্মাকে নিয়ে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে। আইরিন উপর বারান্দায় ছিল। সিজানকে আসতে দেখে সে দৌড়ে বারান্দা থেকে নিচে নেমে আসে।
জাহানারা চৌধুরীকে দেখেই সালাম দেয় সে।
” আসসালামু আলাইকুম, আন্টি।
” ওয়ালাইকুম আসসালাম। কেমন আছো.?
” আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?
” ভালো আছি দেখেই তোমাকে দেখতে আসলাম।
” আচ্ছা আন্টি ভিতরে আসেন।
আইরিন, জাহানারা চৌধুরী ও সিজানকে ভিতরে নিয়ে আসে।
” আন্টি আপনারা বসুন, আমি আম্মাকে ডেকে নিয়ে আসছি।
” আচ্ছা।
আইরিন গিয়ে, তার আম্মা আব্বাকে ডেকে নিয়ে আসে। উনারা আসতেই একজন আরেকজনের সাথে কুশল বিনিময় করে।
জাহানারা চৌধুরী এবার, আইরিনের আব্বা আম্মাকে উদ্দেশ্য করে বলে,
” ভাইজান, আপা কথা না প্যাচিয়ে আমি বলি কেনো আপনাদের বাড়িতে আসলাম। আমি আমার ছেলের জন্য, আপনাদের মেয়েকে পছন্দ করেছি। আপনাদের মেয়েকে আমি আমার ছেলের বউ করতে চাই।
ও (সিজান) তো আপনাদের এখানে আগেও আসছে। তাই ওর আচার আচরণ অবশ্যই আপনারা দেখে থাকবেন। আপনারা রাজি থাকলে, আমি কথা এগিয়ে নিতে চাই।
” এই তো খুব ভালো সংবাদ আমাদের জন্য। আমাদের মেয়ের জন্য সিজানের মতো ছেলেকেই খুঁজছি আমরা, আপনার ছেলের ব্যবহার মাসাল্লাহ।
এমন সময় সিজান বলে উঠে,
” আম্মা তোমরা কথা বলো, আমরা একটু বাইরে থেকে আসি।
সিজানের কথা শুনে সবাই হেসে উঠে,
” আচ্ছা যাও।
সিজান আগে বাসা থেকে বের হয়ে আসে, পিছন পিছন আইরিনও বের হয়ে আসে।
দুজনে গিয়ে পুকুর পাড়ে বসে। দুজনে চুপচাপ।
সিজান মুখ খুলল,
” এতো চুপচাপ কেনো? ফোনে তো খুব কথা বলতে পারো।
” আমার এখন না লজ্জা লাগছে?
” কি তোমার লজ্জাও আছে.?
” কি বলতে চান আপনি? আমার লজ্জা নাই? আমি বেশরম? (রেগে)
” আরে আমি কখন বললাম তুমি বেশরম? তোমার তো অনেক লজ্জা, তুমি তো লজ্জায় কথাও বলতে পারো না।(হাসি চেপে রেখে)
” আপনি হাসছেন কেনো?