সিজান মুখ খুলল,
” এতো চুপচাপ কেনো? ফোনে তো খুব কথা বলতে পারো।
” আমার এখন না লজ্জা লাগছে?
” কি তোমার লজ্জাও আছে.?
” কি বলতে চান আপনি? আমার লজ্জা নাই? আমি বেশরম? (রেগে)
” আরে আমি কখন বললাম তুমি বেশরম? তোমার তো অনেক লজ্জা, তুমি তো লজ্জায় কথাও বলতে পারো না।(হাসি চেপে রেখে)
” আপনি হাসছেন কেনো?
” তাহলে কি আমি হাসবো না? তুমি চাও আমি কান্না করি?
” উফ আপনি না বড্ড ফাযলামি করতেছেন।
বাদ দেন। এখন বলেন তো আমাকে কেমন লাগছে?
” পিক দেখে তো বলেছিই।
” উহু এখন সামনাসামনি দেখে বলেন, কেমন লাগছে আমাকে.?
” ওকে। দাঁড়াও। তোমাকে ভালোমতো দেখে বলি।
সিজান এই কথা বলে আইরিনের দিকে তাকিয়ে ভালোমতো দেখার ভান করে। তারপর বলে,
” খুব সুন্দর লাগছে তোমাকে।
” থ্যাঙ্কিউ।
” আমি ভাবছি অন্য কথা।
” কী.?
” তোমার আম্মু আব্বু বিয়েতে রাজি হলো কেনো? তোমার মতো একটা পিচ্চি মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিতে চায় উনারা। এটা ঠিক না।
” মানে কী? আপনি কি চান না আমাকে বিয়ে করতে? উনারা রাজি হয়েছে দেখে খুশি হন নাই?
হইছে থাক বিয়ে করতে হবে না আমাকে। আমি গিয়ে মানা করে দিয়ে আসি।
আইরিন উঠতে গেলে সিজান বাধা দেয়।
” আরে পুরো কথাটা তো শুনবে। না শুনেই দৌড়াতে থাকে।
” কী শুনবো হ্যাঁ? আপনি তো আমাকে বিয়ে করতে চান না এটাই বুঝালেন।
” থাপ্পড় মারবো। আমি ভাবলাম আমাদের বিয়েটা ফিল্মি স্টাইলে হবে। তোমার আব্বু আম্মু রাজি হবে না। তখন আমি গিয়ে বলবো, আন্টি আমি আপনার মেয়েকে ভালোবাসি, আপনার মেয়ের বিয়ে আমি অন্য কোথাও হতে দিবো না। দরকার হলে আমি ওকে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করবো। কেউ বাধা দিতে আসলে তার লাশ পড়বে।
” এ্যা আসছে ঢঙ করতে।
” হাহাহা।
” আচ্ছা চলেন উঠি।ভিতরে যাই।
” আচ্ছা চলো।
সিজান, আইরিনের খুব শীঘ্রই বিয়ের আগের প্রেমের ইতি ঘটতে যাচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহ পর তাদের বিয়ের দিন ধার্য করা হলো।
” কী করেন হবু জামাই আমার.?
” হবু বউয়ের কথা ভাবতেছি।
” হু ঢঙ। কিছু বললেই এখন হবু বউয়ের কথা ভাবে।
” আরে সত্যি হবু বউয়ের কথাই ভাবতেছিলাম।
” তাই.? তাহলে কী ভাবতেছিলেন.?
” ভাবতেছি, দিন গুলো যাবে কবে? কবে হবু বউকে বউ হিসেবে নিজের কাছে পাবো।
” তাই, এতো তাড়া.?
” হুম রে। তোর জন্য আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি। ভাবিনি এতোটা পাগল হয়ে যাবো তোর জন্য।
” বাহ প্রেমে পড়ে, পুরোই দেওয়ানা হয়ে গেছেন।(হেসে)
” হুম।
” আপনাকে না দেখতে ইচ্ছে করতেছে। একবার আসবেন.?
” তুমি যেহেতু বলেছো। আসতে তো হবেই।
” কখন আসবেন.?
” উঁহু সারপ্রাইজ। এসেই ফোন দিবো।
” আচ্ছা আমি অপেক্ষায় থাকবো।
” আচ্ছা এখন তাহলে রাখছি।
” হুম, ভালোবাসি।
” আমিও ভালোবাসি।
আয়ান, ইমরানের অফিসে আসে। ইমরানের কেবিনে ঢুকেই সে বলে উঠে,
” কীরে শালা? তোর দেখি কোনো খোঁজ খবরি পাওয়া যায় না।
” অবজেকশন ইও রোনার, আমি তোর শালা না, তুই আমার শালা। দুলাভাই বল।
” রাখ তোর দুলাভাই। চল একটু আড্ডা দিয়ে আসি।
অনেকদিন হয়েছে দুই বন্ধু আড্ডা দিই না।
” আচ্ছা চল,।
সিজান, আয়ান দুজনেই অফিস থেকে বের হয়ে যায়।
সিজান, আইরিনের নাম্বারে ডায়াল করে। আইরিন ফোন রিসিভ করে অভিমানী কন্ঠে বলে,
” আপনার জন্য অপেক্ষা করে আসছি, আর আপনি আসছেন না।
” বারান্দায় আসো।
বারান্দায় আসো, কথাটা শুনে আইরিন দৌড়ে আসে। বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাস্তার দিকে তাকাতেই দেখে সিজান দাঁড়িয়ে আছে। আইরিনকে দেখে হেসে হাত নেড়ে হাই জানায়।
আইরিন আর বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকেনি। বারান্দা থেকে নেমে দৌড়ে সিজানের কাছে এসে থামে।আইরিন হেসে, সিজানের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সিজানও এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে। আইরিন, সিজানের বুক থেকে উঠে, সিজানের দিকে তাকায়।
” থ্যাঙ্কিউ, আসার জন্য।
সিজান প্রতিউত্তরে হেসে তার পিছনে লুকিয়ে রাখা হাত টা এবার সামনে আনে। সিজানের হাতে একটা বক্স। সিজান বক্স টা আইরিনের দিকে বাড়িয়ে দেয়।
” আমার জন্য?
” না, আমার আরো দশ বারোটা হবু বউ আছে, তাদের জন্য।
” মেরে ফেলবো একদম। হবু বউ, বউ একটাই।
আইরিন বক্স টা হাতে নেয়।
” কী আছে এখানে.?
” এতো তাড়া কীসের জানার? খুললেই দেখতে পারবে।
” আচ্ছা।
” এবার তাহলে আমি যাই।
” মাত্রই আসলেন। আপনার এতো তাড়া কীসের যাওয়ার, হ্যাঁ?
” কেউ দেখে ফেললে.?
” কেউ দেখলে কী হবে,হ্যাঁ? আপনি আপনার হবু বউয়ের সাথে দেখা করতে এসেছেন। এখানে কার কী, হ্যাঁ? কেউ কোন সাহসে কিছু বলবে?
” আচ্ছা তাহলে চলো হাটি। (হেসে)
” চলেন।
সিজান, আইরিন দুজনেই সরু রাস্তা দিয়ে হাটতে থাকে, আর নিজেদের মনের কথা গুলো একে অন্যের সাথে শেয়ার করতে থাকে।
অনেকটা পথ আসার পর দুজনে এবার রাস্তার ধারে ঘাসের উপর এসে বসে।
” এইই তোমাদের পরিবারে ঘর জামাউ থাকার ব্যবস্থা আছে?
” কেনো কেনো?